মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৬৭

চীনে একদিনেই ২৪২ জনের মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ডিজিস বা কভিড-১৯ আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু হয়েছে গতকাল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশ এর রাজধানী উহানে গতকাল ২৪২ জন মারা গেছেন। নিয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজার ৩৬৭। খবর এএফপি।

মৃতের পাশাপাশি কভিড-১৯- আক্রান্তের সংখ্যাও খুব দ্রুত বাড়ছে। কেবল গতকাল একদিনেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৪০ জন। সব মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এমন একটি সময়ে হঠাৎ করে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল, যখন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভাইরাসটি মোকাবেলায় ইতিবাচক ফলাফলের দাবি করেছেন। মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে নতুন করে দেশটিতে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ আরো বেড়েছে।

এদিকে নতুন করে ভিয়েতনামে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে। স্থলবেষ্টিত চীনের প্রতিবেশী দেশটিতে ছয়জন কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে এটি মোকাবেলায় আরো কঠোর অবস্থানে গিয়েছে ভিয়েতনাম সরকার। একটি গুচ্ছগ্রামে ব্যক্তিদের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশটি প্রায় ১০ হাজার মানুষকে কোয়ারান্টাইন করে রেখেছে। এছাড়া হুবেই প্রদেশের বাইরে আরো ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রদেশটির বাইরে কভিড-১৯- আক্রান্তের পরিমাণ কমেছে। বর্তমানে প্রদেশটির বাইরে ৩১২ জন ভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছেন।

এদিকে ভাইরাসটি মোকাবেলায় ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করায় ভাইরাসটির উত্পত্তিস্থল হুবেই প্রদেশের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি।

শি জিনপিং ভাইরাসটি মোকাবেলায় ইতিবাচক ফলাফলের দাবি করলেও বিপরীত তথ্য দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সংস্থাটি মনে করছে, এখনই ভাইরাসটি মোকাবেলায় সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে এটি বলার সময় আসেনি। জাতিসংঘের সংস্থাটির হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মিশেল রায়েন বলেন, আমি মনে করি ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের শুরু, মাঝামাঝি অবস্থায় অথবা শেষ পর্যায়ে এসেছে এটি বলার এখনো সময় আসেনি।

ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে আস্তে আস্তে পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে হুবেই প্রদেশের লাখ লাখ বাসিন্দা। হঠাৎ করে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রদেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, ফুসফুসের ছবি বিশ্লেষণ করে ক্লিনিক্যালি ডায়াগনসিসের মাধ্যমে আক্রান্তের সংখ্যা নির্ধারণ করা হচ্ছে। যে কারণে আক্রান্তের সংখ্যা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রদেশটিতে ভাইরাসটি নির্ণয়ে এখন আরো উন্নতমানের ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, তারা আগের যেকোনো সন্দেহজনক ব্যক্তিকেও এখন নতুন করে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসছে। কারণে গতকাল আক্রান্তের সংখ্যা এত বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে ২০০২-০৩ সালে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাসের সময় তথ্য গোপন করলেও কভিড-১৯-এর বিষয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখায় চীনের প্রশংসা করেছে ডব্লিউএইচও। যদিও সার্সের মতো নভেল করোনাভাইরাসের তথ্য গোপনের আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

অন্যদিকে চীনের বাইরে করোনাভাইরাস উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভিয়েতনাম জাপানে। এর মধ্যে ভিয়েতনাম সরকার রাজধানী হ্যানয় থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরবর্তী কৃষিপ্রধান সন লয় সম্প্রদায়কে ২০ দিনের মতো বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। অঞ্চলের প্রবেশমুখে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। এছাড়া জাপানে ডায়মন্ড পিন্স নামের জাহাজে কোয়ারান্টাইন করে রাখা ব্যক্তিদের মধ্যে আরো ৪৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির লক্ষণ দেখা গিয়েছে। নিয়ে জাহাজটির যাত্রীদের মধ্য থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১৮ জনে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন