নতুন নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তারকে বিশ্বজুড়ে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ভাইরাসটি মানুষ, পাখিসহ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে রোগের কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। কেননা এ ভাইরাস মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে সংক্রমণ ঘটায়, যা প্রাথমিকভাবে লঘু হলেও বিরল ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে। গরু ও শূকরের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া এবং মুরগির ক্ষেত্রে এটি একটি উচ্চশ্বাসকষ্ট রোগের কারণ। চিকিৎসকদের মতে, আপাতদৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ নেই, যা এ রোগের প্রতিরোধ বা চিকিৎসার জন্য অনুমোদিত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা এবং জ্বর ও কাশির সঙ্গে তীব্র শ্বাসকষ্টের অসুবিধা। আরো মারাত্মক পর্যায়ে সংক্রমণটি নিউমোনিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে তীব্র অসুবিধা, কিডনি অকেজো করা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়, ২০১৯-এনকনভি হিসেবে স্বীকৃত করোনাভাইরাস নতুন মাত্রায় চীনের উহানে ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে প্রায় ৪৪ হাজার ৬৫৩ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১১৫ জন। চীনের বাইরে ৫০টিরও বেশি সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। চিকিৎসা গবেষকরা বলছেন, ভাইরাসটির ভয়াবহতা ২০০৩ সালে চীনে সংঘটিত সার্স মহামারীর প্রাদুর্ভাবকে ছাড়িয়ে গেছে।
সংক্রামক রোগগুলো সাধারণত সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমিত হয় এবং ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরোক্ষ যোগাযোগ, যেমন বায়ুবাহিত সংক্রমণ, দূষিত পদার্থ, খাদ্য ও পানীয় জল, প্রাণী ও ব্যক্তির যোগাযোগ, প্রাণী জল গ্রহণ করে এমন জলাধার, পোকার কামড় এবং প্রাকৃতিক জলাধারগুলো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার অন্যান্য উৎস।
বলার অপেক্ষা রাখে না, চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে নতুন বিপর্যয়ের সূচনা করছে। তাছাড়া বিষয়টির নিজস্ব আন্তর্জাতিক প্রভাবও রয়েছে। ইবোলার প্রাদুর্ভাবে আফ্রিকায় তৈরি হওয়া সমস্যা এখনো বিরাজমান। পূর্ব এশিয়া থেকে উদ্ভূত হয়ে ভ্রমণের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিস্তার লাভের ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রভাবগুলোও আমরা লক্ষ করেছি। গত বছর আমাদের দেশে কয়েক হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এবং শতাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এর আগে দেশের লোকেরা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া উভয়ই মশার কারণে হয়েছে বলে চিহ্নিত। তাছাড়া মশা ম্যালেরিয়ার অনুঘটক।
কীভাবে গত কয়েক শতাব্দীতে মহামারী বিশ্বের জনসংখ্যার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে, এ মুহূর্তে স্মরণ করা দরকার। আজকের বিশ্বে এমন পরিস্থিতি উদয় হতে পারে, এমনটা কারো কল্পনা করাও উচিত হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের যে উক্তিটি মনে রাখা উচিত তা হলো, নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ সর্বদা ভালো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পাঁচটি উপাদান সমন্বিত একটি ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রবর্তনের সুপারিশ করে: ১. জনস্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীকে শক্তিশালীকরণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে পরামর্শ, সামাজিক সংহতকরণ ও আইন প্রণয়ন; ২. স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য খাতের (সরকারি ও বেসরকারি) মধ্যে সহযোগিতা কার্যক্রম; ৩. সর্বাধিক ব্যবহারের জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণে একীভূত পদ্ধতি; ৪. লক্ষ্যবস্তুগুলোয় যথাযথ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ৫. স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত সাড়া নিশ্চিত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধি। এ পরামর্শগুলো শুধু আক্রান্ত জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য নয়, পাশাপাশি অন্যান্য দেশ, যারা সৌভাগ্যক্রমে এখনো ডেঙ্গু, ইবোলা বা করোনাভাইরাস সংক্রমিত নয়, তাদের ক্ষেত্রেও সতর্কতার সঙ্গে সমন্বয় করা জরুরি। বিশেষ করে সুরক্ষিত নয়, এমন দেশের জন্য বিষয়গুলো বেশি প্রযোজ্য।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে যে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ সংস্করণটি ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে। তাদের পরামর্শে নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা আরো তীব্র করা হয়েছে। ভ্রমণ থেকে শুরু করে বড় বড় ইভেন্ট বাতিল করেছে দেশটি। এর মধ্যে চীনাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত। রাস্তায় নেমে আতশবাজি পোড়ানোর বিপরীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে চীনারা যার যার ঘরে বসে সময় কাটিয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাস গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরের সামুদ্রিক মাছের বাজার থেকে উদ্ভূত হয়, যা বেআইনিভাবে বন্যপ্রাণী বিক্রির বাজার। এখান থেকে উদ্ভূত হয়ে ভাইরাসটি চীনের অন্যান্য শহর—বেইজিংয়ের পাশাপাশি সাংহাই—এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ভিয়েতনাম, নেপাল ও কানাডায় ছড়িয়ে পড়ে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মোতাবেক যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রায় এক হাজার নাগরিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিকে কোয়ারান্টাইন অঞ্চল থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য চার্টার প্ল্যান প্রেরণ করে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে ২০০২ ও ২০০৩ সালে সার্স প্রাদুর্ভাব (তীব্র শ্বাসকষ্টের উপসর্গ) বেইজিংয়ে শুরু হওয়ার পর এটি মোট ৮ হাজার ৯৬ জন আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ৭৪৪ জনের জীবননাশের কারণ হয়। এরই মধ্যে চীনা গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে সর্বশেষ ভাইরাসটি বাদুড় থেকে শুরু হতে পারে, যেমন সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে হয়েছিল। তাছাড়া স্পষ্টতই ভাইরাসটি পূর্ববর্তী সংস্করণের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের ৮০ শতাংশ বহন করে।
করোনাভাইরাসের আক্রমণ ও সংক্রমণ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলেও সুদীর্ঘ ছায়া ফেলছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় পুনরুদ্ধারের অস্থায়ী লক্ষণ দেখা গেলেও বৈশ্বিক অর্থনীতি ও উৎপাদন খাত দুটিই বিপর্যয়ের মুখোমুখি। ইউরোপজুড়ে স্টক্স ৬০০ সূচকের পতন ঘটেছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ভ্রমণ, বিলাসবহুল ও খনিজ পণ্যের শেয়ারের মূল্য কমেছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের বরাতে জানা যায়, লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচকের ২ দশমিক ২ শতাংশ ও জার্মানির ড্যাক্স সূচক ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে। পতনের প্রভাব পড়েছে আমেরিকান ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারবাজারেও, বিশেষত এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার সূচক ঘিরে। ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনের আর্থিক রাজধানী সাংহাইয়ের সব প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। দেশটির অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র সুঝুর (আইফোন, ফক্সকন, জনসন অ্যান্ড জনসন ও স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের মতো সংস্থাগুলোর মালিকানাধীন কারখানার) উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং কয়েক লাখ অভিবাসী শ্রমিককে পরবর্তী ঘোষণা দেয়ার আগে কাজে ফিরে না আসার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে অর্থনীতিবিদরা খুব সতর্কভাবে পরিসংখ্যানগুলো রাখছেন। তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ অনুমান করেছেন যে সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যদিও ওষুধ শিল্পের জন্য এটি লাভজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন তারা।
চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রাক-প্রতিরক্ষামূলক সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং এ অবস্থায় কী করণীয় ও কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা চাই, সে সম্পর্কে যথাযথ আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অংশীদার হওয়ার ফলে অসংখ্য বাংলাদেশী চীন সফর করে। চীনা ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে আসেন। এছাড়া অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী চীনের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। সাম্প্রতিক সময়ে অসংখ্য বাংলাদেশী চীনের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করেছে। বিষয়গুলো পুরো পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করে। এদিকে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে বিপুলসংখ্যক চীনা নাগরিক জড়িত থাকার বিষয়ও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। সংক্রমণের সম্ভাব্য ঝুঁকির কারণে চীন সফর এবং বাংলাদেশে ফিরে আসা নিয়ে চীনের এ শ্রমিকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
ভাইরাস সম্পর্কিত ক্রমবর্ধমান ভীতি এবং এর ক্ষতির দিকটি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। সরকার জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সেখানে অবস্থানরত ৩৬০ জনেরও বেশি বাংলাদেশীকে বিশেষ বিমানে করে ফিরিয়ে আনা হয়, যার মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী, যারা সাধারণত সংক্রমিত এলাকাগুলোয় অবস্থান করছিল। দেশে ফিরিয়ে এনে এখনো তাদের কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়েছে এবং তাদের নিয়মিত চিকিৎসা ও তদারক করা হচ্ছে। সরকারের এ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়, যা স্বভাবতই রোগের সম্ভাব্য বিস্তার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী।
সতর্কতামূলক পদক্ষেপগুলো চূড়ান্তকরণে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করে। ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) এরই মধ্যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের ভাইরাস শনাক্ত করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে আহ্বান জানিয়েছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের। সবচেয়ে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, ঢাকা বিমানবন্দরে ভাইরাস স্ক্রিনিং করা হয়েছে চীন থেকে আসা ২ হাজার ৫০০-এরও বেশি যাত্রীর। সৌভাগ্যক্রমে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমিত কাউকে পাওয়া যায়নি।
ফরাসি সরকার ও ফরাসি গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি পিএসএ উহান বং এর আশপাশের শহরগুলো থেকে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী ও পরিবারগুলো সরিয়ে নিয়েছে। চীন সরকারের সহযোগিতায় জাপানও দ্রুত তাদের নাগরিকদের দেশটি থেকে সরিয়ে নেয়। নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারও।
আক্রান্ত রোগীদের সেবা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ উহানে কয়েকশ মেডিকেল কর্মী নিয়োগ করে। পাশাপাশি চীনা সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় মাত্র ১০ দিনের মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করা হয়, যা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। তাছাড়া উহানের রাস্তা থেকে অপ্রয়োজনীয় যানবাহন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে অসুস্থ নাগরিকদের কাছের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় অন্যান্য দেশ চীনের পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারে। যদিও গত বছর বাংলাদেশে আমরা যখন ডেঙ্গু মহামারীতে ভুগছিলাম, তখন দুর্ভাগ্যক্রমে এ-জাতীয় পর্যাপ্ত সময়োপযোগী সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিয়ষগুলো দেখিনি।
এ মুহূর্তে আমাদের সতর্ক হওয়া জরুরি। মনে রাখতে হবে, করোনাভাইরাস যেন পরবর্তী সময়ে আমাদের দুঃখের কারণ হয়ে না আসে। তাই আসুন, আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করি—১. সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া বা বারবার জীবাণুনাশক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা; ২. কাশি বা হাঁচি দেয়ার সময় মুখ ও নাক ঢেকে রাখা; ৩. ঠাণ্ডা বা ফ্লুতে আক্রান্ত কারো সঙ্গে অরক্ষিত ও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলা; ৪. আমাদের যদি জ্বর, কাশি বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা হয়, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে; ৫. বাজার ঘুরে দেখার সময় জীবন্ত প্রাণী ও প্রাণীর সংস্পর্শে থাকা বস্তুর সঙ্গে সরাসরি ও অরক্ষিত যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে হবে।
আসুন আমরা চলমান দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি বিবেচনা করে যথাযথ আচরণ করি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে আন্তঃসক্রিয় গঠনমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করি। যাতে আমাদের নাগরিকদের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া ও অন্য দেশের নাগরিকরা নির্ভয়ে জীবনযাপন করতে পারে। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি অনুসারে আমাদের স্বাস্থ্য খাত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, ফেস মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে পদক্ষেপ নেবে।
মোহাম্মদ জমির: সাবেক রাষ্ট্রদূত
সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার