বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভার সিদ্ধান্ত

লাইসেন্স পেল বেঙ্গল ব্যাংক, ইসলামী ধারায় রূপান্তর দুটির

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ব্যাংকিং খাতে যুক্ত হলো আরো একটি বেসরকারি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় গতকাল বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের দুটি সাধারণ ধারার ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারায় রূপান্তরের অনুমোদন পেয়েছে।

পর্ষদ সভায় পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারায় রূপান্তরের অনুমোদন পাওয়া ব্যাংক দুটি হলো স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের নামও পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকটির নতুন নাম হবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪০২তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইতিপূর্বে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) পাওয়া সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেডকে লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টিও আলোচনা হয়। কিন্তু এখনো পরিশোধিত মূলধনের অর্থ জমা দিতে না পারায় ব্যাংকটিকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি। তবে পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের স্থগিত এলওআইয়ের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়ে বলেন, এলওআইয়ের শর্ত পূরণ করায় বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক দুটিকে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারার ব্যাংকে রূপান্তরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিবর্তিত নাম হবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।

সূত্রমতে, দেশের ৬০তম তফসিলি ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পাওয়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক হবেন ১৭ জন। একই সঙ্গে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিতে পারবে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন।

লাইসেন্স পাওয়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডসহ বর্তমানে দেশের তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল ৬০। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক হলো ছয়টি। সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংকের সংখ্যা তিন। বেসরকারি ব্যাংক ৪২টি। এর মধ্যে প্রচলিত ধারার ব্যাংক ৩৪। ইসলামী ধারার ব্যাংক হলো আটটি। তবে প্রচলিত ধারার দুটি ব্যাংক পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ধারায় রূপান্তরের ফলে ইসলামী ধারার ব্যাংকের সংখ্যা হবে ১০। এছাড়া দেশে নয়টি বিদেশী ধারার ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এলওআই পাওয়া পিপলস ব্যাংক লিমিটেডের জন্য আবেদন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এমএ কাশেম। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের জন্য ব্যাংকটির আবেদন করা হয়েছে। সিটিজেন ব্যাংকের আবেদনটি এসেছে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবার থেকে। আনিসুল হকের মা জাহানারা হককে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনপত্রে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সিটিজেন ব্যাংকের নথিপত্র চূড়ান্ত হলেও এখনো পরিশোধিত মূলধনের অর্থ জমা করতে পারেনি। এজন্য ব্যাংকটিকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি। মূলধনের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়ার পরই ব্যাংকটির লাইসেন্স দেয়া হবে। তবে অনুমোদন প্রক্রিয়ায়ই বড় ধরনের অনিয়মে জড়িয়েছে পিপলস ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির উদ্যোক্তাদের কয়েকজনের অর্থের উৎসে অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরিপ্রেক্ষিতে পিপলস ব্যাংক লিমিটেডকে দেয়া এলওআই স্থগিত করা হয়েছিল। তবে বিতর্কিত উদ্যোক্তাদের বাদ দেয়ায় ব্যাংকটির এলওআইর ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মূলধনের অর্থ জমা দিলে ব্যাংকটিকেও লাইসেন্স দেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন