ঢাকা-১০ আসনে উপনির্বাচন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন

তানিম আহমেদ

ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। ক্ষমতাসীন দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন শেখ ফজলে নূর তাপস। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ওইদিনই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। এরপর ফেব্রুয়ারি শূন্য ঘোষিত আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ মার্চ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এরই মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দলীয় ফরম সংগ্রহ করার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। ১৫ ফেব্রুয়ারি দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে দলের প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা-১০ আসনে দলের মনোনয়নের বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতা সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনকে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। তাকে দলের জন্য কাজ করতে বলা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের দুই প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ছিলেন তিনি। এটাই ছিল রাজনীতির মাঠে তার ওয়ার্মআপ। বিশেষ কোনো কারণ না ঘটলে তিনিই হবেন তাপসের উত্তরসূরি।

জানতে চাইলে সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেন, তাহলে আমি অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেব।

সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ছাড়াও আসনে তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ফজলে নূর তাপসের স্ত্রী আফরিন তাপস, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নাম আলোচনায় আনছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, কারা কারা দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন, তা তো আমরা জানি না। সুতরাং এটা নিয়ে এখন আমরা কিছুই বলতে পারি না। তবে যখনই কোনো নির্বাচনে আমরা আমাদের প্রার্থী নির্ধারণ করি, তখন তিনটি বিষয়ই আমরা দেখি। প্রথমে দেখি প্রার্থীর দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, তারপর দেখি প্রার্থীর এমপি হওয়ার সক্ষমতা রয়েছে কিনা এবং সর্বশেষ হলো এলাকায় জনপ্রিয়তা। একই সঙ্গে আমরা দেখব প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কিনা। এগুলোর ওপর ভিত্তি করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

রাজনীতির বাইরে অন্য কোনো পেশাজীবীর বিষয়ে আপনাদের কোনো চিন্তাভাবনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাজনীতিটা সংকীর্ণ করে ফেলবেন না আপনারা। ব্যবসায়ী নেতা সালাম মুর্শেদীর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সালাম মুর্শেদী তো রাজনীতির বাইরে ছিলেন না, তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ট্রেড পলিটিকস করেছিলেন। ট্রেড পলিটিকস তো রাজনীতির বাইরে বলা যায় না। কেউ তৃণমূলের রাজনীতি করেন, কেউ ব্যবসার রাজনীতি করেন, কেউ শ্রমিকের রাজনীতি করেন। সবাই রাজনীতি করছেন। রাজনীতি মানেই হচ্ছে দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করা। তাই যে কেউ দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন।

ঢাকা-১০ আসনের সঙ্গে গাইবান্ধা- বাগেরহাট- আসনেও ভোট হবে আগামী ২১ মার্চ। গত ১০ জানুয়ারি মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে বাগেরহাট- এবং গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে গাইবান্ধা- আসন শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়।

বাগেরহাট- আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম মিলন, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এএইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীর রঞ্জন হালদার সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি অধ্যাপক আবদুর রহিম খান।

এদিকে গাইবান্ধা- আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হক, ইউনুস আলী সরকারের বড় ছেলে . ফয়সাল ইউনুস এবং পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য তোফাজ্জল হোসেন সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন