বিএসইসির প্রজ্ঞাপন জারি

শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন ছাড়া ৫০ শতাংশের বেশি সম্পদ বিক্রি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০০৯ সালের ১ জুন জারীকৃত একটি প্রজ্ঞাপনে সংশোধন এনে গত বুধবার নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সংশোধনীতে নতুন একটি নির্দেশনা সংযোজন করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছেকোনো তালিকাভুক্ত ইস্যুয়ার কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের সাধারণ সভায় অনুমোদন না নিয়ে তাদের সর্বশেষ নিরীক্ষিত হিসাবে প্রদত্ত মোট স্থাবর সম্পত্তির ৫০ শতাংশের বেশি সম্পদ বিক্রির চুক্তিতে আবদ্ধ হবে না এবং প্রথম লেনদেনের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছরের মধ্যে একক বা যৌথভাবে লেনদেনের মাধ্যমে ওই বিক্রয় সীমা অতিক্রম করতে পারবে না।

২০০৯ সালের ওই প্রজ্ঞাপনে রিলেটেড পার্টি বা সম্পৃক্ত পক্ষের সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানির লেনদেনের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া ছিল। এতে বলা ছিল, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি তার কোনো পরিচালক কিংবা পরিচালকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে নিজের স্থায়ী সম্পদের ১ শতাংশ বা তার বেশি পরিমাণ সম্পদ কেনাবেচার চুক্তি করতে পারবে না। শুধু তা-ই নয়, এমন কোনো প্রাইভেট কোম্পানি যার পরিচালক কিংবা সদস্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিরও পরিচালক, কিংবা এমন কোনো পাবলিক কোম্পানি, ম্যানেজিং এজেন্ট, ম্যানেজার বা পরিচালক, যিনি তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির যেকোনো পরিচালকের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করে থাকেনএমন কারো সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের ১ শতাংশ বা তার বেশি পরিমাণ সম্পদ কেনাবেচার চুক্তি করতে পারবে না তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। একইভাবে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানির রাজস্ব আয়ের ১ শতাংশ কিংবা তার বেশি পরিমাণ পণ্য ও উপকরণ সরবরাহ করা যাবে না। এক্ষেত্রে যে হিসাব বছরে রিলেটেড পার্টির সঙ্গে লেনদেন করা হবে তার আগের হিসাব বছরের স্থায়ী সম্পদ ও রাজস্ব আয়ের ভিত্তিতে ১ শতাংশ বা তার বেশি পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।

প্রজ্ঞাপনটিতে আরো বলা ছিল, এ ধরনের কোনো চুক্তি করার ৩০ মিনিটের মধ্যে চুক্তির ধরন ও পরিমাণ বিএসইসি এবং স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে ফ্যাক্স কিংবা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। পাশাপাশি দুটি বহুল প্রচারিত বাংলা ও ইংরেজি সংবাদপত্রে তা প্রকাশ করার কথাও বলা হয়েছে।

বুধবার জারীকৃত নতুন প্রজ্ঞাপনে কমিশন আগের প্রজ্ঞাপনটির সঙ্গে কেবল সম্পদ বিক্রিসংক্রান্ত নির্দেশনাটি যোগ করেছে। এর সঙ্গে ২০০৯ সালে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনটির অন্যান্য নির্দেশনা বলবত্ থাকবে বলে কমিশন জানিয়েছে।

এদিকে, দেশের সব ইস্যুয়ার কোম্পানিকে করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডের (সিজিসি) সব বিধান বাধ্যতামূলকভাবে পরিপালনের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। কোনো বিধান পরিপালনে অস্বীকৃতি জানালে অথবা ব্যর্থ হলে অথবা এ বিধান লঙ্ঘন করলে তা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর অধীনে শাস্তিযোগ্য বলে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অ-তালিকাভুক্তকরণ অথবা শেয়ারের লেনদেন স্থগিতকরণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বুধবার প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডের ব্যাখ্যায় এ কথা বলেছে বিএসইসি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ জুন করপোরেট গভর্ন্যান্স কোডের প্রজ্ঞাপন জারি করে বিএসইসি, যা ওই বছরের ১০ জুন বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশ করা হয়। কমিশন মনে করছে, বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে ওই প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। এ কারণে বুধবার আগের প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা দিয়ে নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিএসইসি।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি বিএসইসির ৭১৬তম কমিশন সভায় করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড কিছু সংযোজন ও সংশোধন সাপেক্ষে অনুমোদন করা হয়। একই সভায় ২০০৯ সালের ১ জুন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনটিতে সংশোধন আনার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন