দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘বেসিস সফটএক্সপো ২০২০’ শুরু

ট্রান্সফর্মিং লাইফ থ্রু ইনোভেশনস্লোগান নিয়ে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী বেসিস সফটএক্সপো ২০২০ শুরু হয়েছে। গতকাল আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী প্রদর্শনী শেষ হবে ফেব্রুয়ারি।

গতকাল ১৬তম বেসিস সফটএক্সপোর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম প্রমুখ। সময় সহসভাপতি (অর্থ) বেসিস সফটএক্সপোর আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান এবং বেসিস সফটএক্সপোর প্লাটিনাম স্পন্সর ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের (ডিবিবিএল) চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ, বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারহানা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বেসিস সফটএক্সপো ২০২০-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষত, ২০২৪ সাল পর্যন্ত করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ, সফটওয়্যার আইটি সেবা রফতানি আয়ে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনার উল্লেখ করে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব এখন এগিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে আমাদের তরুণ সমাজকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ তারাই আমাদের সম্পদ। আমাদের মেধাবী তরুণরা বাইরে কাজ করছে। যথাযথ সুযোগ তৈরি করতে পারলে দেশেই কাজ করতে পারবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সফটওয়্যার, অর্থাৎমেড ইন বাংলাদেশধারণাকে উৎসাহিত করতে হবে। সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে দাতা সংস্থার সহায়তার বাস্তবায়িত প্রকল্পে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি ছোট-বড় প্রকল্পে কাজের সুযোগ দিতে হবে। বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির অপব্যবহার, সাইবার ক্রাইম বিষয়ে সবাইকে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সচেতন হতে আয়োজন আমাদের সহযোগিতা করবে বলে আমি মনে করি।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বেসিসের আয়োজন সরকারের জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরির কাজকে এগিয়ে নেবে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। বর্তমানে দেশের ৯৬ শতাংশ পরিবার মোবাইল ব্যবহার করছে। বাঙালিরা মেধাবী, বিশ্বের দরবারে বাঙালিরা তাদের মেধার পরিচয় রেখেছে।

তিনি বলেন, সফটওয়্যার রফতানির পরিমাণ বাড়বে। আইটিতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি হলে তা দিয়ে দেশের বাইরে জনশক্তি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন সম্ভব। আমাদের ভৌগোলিক সুবিধা এবং তরুণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আউটসোর্সিংয়েও বাংলাদেশ আরো ভালো করতে পারবে।

বেসিস সফটএক্সপো ২০২০ নিয়ে বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, দেশের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশে-বিদেশে অনেক বড় বড় প্রকল্পে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। সেজন্য দেশের সব কাজ বিদেশীদের দিয়ে করা গেলেও তা স্থানীয় কোম্পানিগুলো দিয়েই বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় তথ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।

বেসিস সফটএক্সপো ২০২০-এর আহ্বায়ক এবং বেসিসের সহসভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান বলেন, প্রদর্শনী এলাকাকে ১০টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি . জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরবে।

বেসিস সফটএক্সপোতে দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য থাকছে বি-টু-বি ম্যাচমেকিং সেশন, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিজেদের খুব সহজেই ব্যবসার প্রসার করতে পারবেন। বছর সুইডেন, জাপান, নেদারল্যান্ডস থেকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশনে অংশ নেবে। পাশাপাশি অন্য খাত থেকে বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সফলভাবে বি-টু-বি সেশন সম্পন্ন করা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে শীর্ষ ১০টিকেবেসিস টপ টেন ডিজিটাল-রেডিকোম্পানিকে সম্মাননা প্র্রদান করা হবে।

২০০০-এর বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প। ৪৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইনোভেটিভ প্রজেক্ট শোকেসিং, যাদের মধ্যে প্রথম তিনটি ইনোভেটিভ প্রজেক্টকে পুরস্কৃত করা হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন