বিডিএফ সম্মেলন

৪২৫ কোটি ডলারের শর্তহীন ঋণ-অনুদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে—অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ)-২০২০ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। বিশ্বব্যাংক, গ্লোবাল ক্লাইমেট ফান্ড জাইকার মাধ্যমে প্রায় ৪২৫ কোটি ডলার ঋণ অনুদান পাওয়া যাবে। টাকার অংকে ঋণ অনুদানের পরিমাণ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি। প্রকল্প নির্দিষ্ট করা হলে বিভিন্ন মেয়াদে অর্থ দেশে আসা শুরু হবে।

গতকাল শেরেবাংলা নগরে অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল এফসিএ এমপি। বিডিএফ-২০২০ থেকে পাওয়া অর্জন তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যেকোনো সময়ের তুলনায় এবারের বিডিএফ সম্মেলন ভালো হয়েছে। উন্নয়ন সহযোগীদের অংশগ্রহণ ছিল বেশ ভালো। আমাদের প্রয়োজনগুলো তাদের কাছে উপস্থাপন করতে পেরেছি। আমাদের প্রয়োজনের নিরিখেই অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এবারের সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সরাসরি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। সম্মেলনের মাধ্যমে প্রায় ৪২৫ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতি এসেছে। এর মধ্যে ১২০ কোটি ডলার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আগামী চার বছরে প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। অর্থ অনুদান হিসেবে দেবে তারা। এছাড়া বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি রোহিঙ্গা স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে দুটি চলমান প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ছাড়াও আরো একটি নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য সব মিলিয়ে ৩৫ কোটি ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের জন্যও প্রকল্প নেয়া হবে। এসব অর্থ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যবহূত হবে। এছাড়া ফোরামে জাইকা ২৭০ কোটি ডলার ঋণ দেবে। ঋণের অর্থে বাস্তবায়ন করা হবে ছয়টি প্রকল্প।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ১৫ কোটি ডলার ব্যয় হবে স্বাস্থ্য লিঙ্গবিষয়ক প্রকল্পে, ১০ কোটি ডলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পে এবং আরো ১০ কোটি ডলার ব্যয় হবে রোহিঙ্গাদের বহুমুখী সংকট মোকাবেলাসংশ্লিষ্ট প্রকল্পে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক দেশের সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে বড় ধরনের অর্থায়ন করবে। তবে সেটির আর্থিক পরিমাণ নির্ধারণ হয়নি। বৈশ্বিকভাবে জলবায়ু অর্থায়নের টাকা খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে জিসিএফ ফান্ডের মাধ্যমে আমরা প্রায় ১২০ কোটি ডলার পাব বলে আশা করছি। বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির উপনির্বাহী পরিচালক এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে গেছেন। তারা দেশের জলবায়ু তহবিলের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

বিশ্বব্যাংক কিংবা সহযোগী উন্নয়ন সংস্থাগুলোর শর্তারোপের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে তারা আর শর্ত দেবে না। আমাদের এবারের সম্মেলনের অন্যতম অর্জন হলো তাদের সঙ্গে বিষয়ে ভালোভাবে দরকষাকষি করতে পেরেছি। আমরা প্রকল্পগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব, কতটুকু করতে পারব, তার ওপর নির্ভর করেই বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে। বিশ্বব্যাংক এতটাই খুশি যে আমাদের অর্থায়ন করার জন্য তারা মুখিয়ে রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের মতো করে হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এটা আমাদের জন্য ভালো অর্জন। দেশের মানুষের জন্য বড় অর্জন। যেসব সহযোগী উন্নয়ন সংস্থা এখন বাংলাদেশের প্রশংসা করছে, তারা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মডেলের স্বীকৃতি দিচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন