ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বিকল

রমেক হাসপাতালে বন্ধ ডায়ালাইসিস

বণিক বার্তা প্রতিনিধি রংপুর

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের কিডনি বিভাগে সচল থাকা একমাত্র ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটি বিকল হয়ে গেছে। এতে হাসপাতালটিতে ডায়ালাইসিস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কিডনি রোগীরা। অভিযোগ উঠেছে, বিকল হওয়ার তিনদিন আগে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গা করেনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কিডনি বিভাগে সার্বক্ষণিক ডায়ালাইসিস কার্যক্রম চালু রাখতে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট রয়েছে। এর একটি এক বছর আগে বিকল হয়ে গেলেও তা আর মেরামত করা হয়নি। সচল থাকা আরেক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটিতে গত রোববার থেকে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এতে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস কার্যক্রম ব্যাহত হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্লান্টটি গতকাল পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। ফলে ডায়ালাইসিসও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইকিং করে বিষয়টি রোগীদের জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ঘোষণা শোনার পর হাসপাতালে আসা কিডনি রোগী তাদের স্বজনদের মাঝে ক্ষোভ হতাশা প্রকাশ করতে দেখা দেয়। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ডিঘির হাট এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, তিনি তার মা মর্জিনা বেগমকে ডায়ালাইসিস করানোর জন্য সকালে (গতকাল) হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। তবে ডায়ালাইসিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের ফেরত যেতে হচ্ছে। গত রোববারও ডায়ালাইসিস করানো যায়নি। টানা দুবার ডায়ালাইসিস করাতে না পারায় তার মায়ের জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পঞ্চগড়ের ভাওলাগঞ্জ সর্দার পাড়া থেকে আসা শেফালী বেগম বলেন, সপ্তাহে দুদিন ডায়ালাইসিস করানোর জন্য তার স্বামী রশিদুল হককে একাই হাসপাতালে আনানেয়া করেন। ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির ত্রুটির কারণে গত রোববার ঠিকভাবে ডায়ালাইসিস করানো যায়নি। এখন একেবারেই বন্ধ। রমেক হাসপাতালের ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ মো. মোখলেসুর রোগীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ইউনিটে মোট ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিন আছে। তবে এর মধ্যে সচল আছে ১৪টি। প্রতিদিন দুই শিফটে ৫০ থেকে ৮০ জন রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়। ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কবে সচল হবে তা বলা যাচ্ছে না।

রমেক হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান ডা. এবিএম মোবাশ্বের আলম বলেন, ডায়ালাইসিস বন্ধ থাকার কথা চিন্তা করা যায় না। বিশেষ করে প্রতিদিন প্রায় ৩০ জনের মতো মুমূর্ষু রোগীর ডায়ালাইসিস করাতে হয়। বাধ্য হয়ে রোগীদের দিনাজপুর অথবা বগুড়ায় সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. রোস্তম আলী ডায়ালাইসিস বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি, বৃহস্পতিবার (আজ) সন্ধ্যা থেকে ডায়ালাইসিস কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন