আমান ফিডের শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের ১ কোটি টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করার পাশাপাশি কমিশনের কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়ার কারণে বিবিধ খাতের কোম্পানি আমান ফিড লিমিটেডের প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র মনোনীত পরিচালক বাদে) ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাছাড়া আমান ফিডের আইপিও অর্থ ব্যবহারসংক্রান্ত প্রতিবেদন নিরীক্ষার ক্ষেত্রে পেশাগত আচরণ না করার কারণে নিরীক্ষা ফার্ম একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে একনাবিনের পার্টনার মো. রুকনুজ্জামান এখন থেকে আর কখনো আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থের ব্যবহারসংক্রান্ত বিষয়ের নিরীক্ষা করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক . এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭১৬তম কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আমান ফিড লিমিটেডের বিশেষ নিরীক্ষক ম্যাবস অ্যান্ড জে পার্টনার্স চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটি কমিশনের আইপিও অনুমোদনপত্রের (কনসেন্ট লেটার) শর্তানুসারে আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থের যথাযথ ব্যবহার না করে এবং কমিশনে -সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য প্রদান করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১৮ লঙ্ঘন করেছে। একই সঙ্গে কোম্পানিটি কমিশনের অনুমোদন পত্রের , নং শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

অন্যদিকে একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস আমান ফিডের আইপিওর অর্থের নিরীক্ষক হিসেবে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এসব সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের তথ্য না দিয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১৮ লঙ্ঘন করেছে। এসব আইন লঙ্ঘনের কারণে ইস্যুয়ার আমান ফিড লিমিটেডের প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র মনোনীত পরিচালক ব্যতীত) ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা ধার্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। আমান ফিডের আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ ব্যবহারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের নিরীক্ষক একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পার্টনার মো. রুকনুজ্জামান এফসিএ এখন থেকে আর কখনো আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থের ব্যবহারসংক্রান্ত বিষয়ের নিরীক্ষা করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এছাড়া আমান ফিডের আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ ব্যবহারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের নিরীক্ষক একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ নিরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ পেশাগত আচরণ না করায় নিরীক্ষা ফার্মটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইসিএবির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে আইপিওর মাধ্যমে আমান ফিড পুঁজিবাজার থেকে ৭২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। আইপিওর প্রসপেক্টাস অনুসারে অর্থ হাতে পাওয়ার ১৫ মাস বা ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা ব্যয় করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিটি আইপিওর অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৮ সালে মে মাসে আইপিওর পুরো টাকা ব্যয় করে। আমান ফিডের চারজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম মো. তরিকুল ইসলাম। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রত্যেক শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের প্রত্যেককে ২৫ লাখ করে মোট কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে।

রিজেন্ট টেক্সটাইলের পরিচালককের লাখ টাকা করে জরিমানা: হিসাবমান অনুসারে ৩০ জুন ২০১৬ এবং ৩০ জুন ২০১৭ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত না করার পাশাপাশি আর্থিক বিবরণীতে মিথ্যা ভুল তথ্য দেয়া এবং কমিশনের চাহিদা অনুসারে তথ্য না দেয়ায় রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের প্রত্যেক (স্বতন্ত্র মনোনীত পরিচালক বাদে) পরিচালককে লাখ টাকা করে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন