আরামদায়ক ঘুমে ডুবে যেতে...

ফিচার ডেস্ক

আদিকাল থেকে দেশের মানুষ তুলার নরম তোশকে ঘুমিয়ে অভ্যস্ত হলেও আধুনিক সময়ে এসে ম্যাট্রেস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গত এক দশকে আরামদায়ক ঘুমের জন্য ম্যাট্রেসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সর্বোপরি আরামদায়ক বিছানা কেবল ভালো ঘুমেরই নিশ্চয়তা দেয় না, পাশাপাশি দিনের বেলা আপনাকে কাজ করতে উৎসাহিত এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যজনিত অসুস্থতা এড়াতেও সহায়তা করে। ম্যাট্রেস কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখা দরকার। ভালো মানের ম্যাট্রেসগুলো একটু ব্যয়বহুল, তবে সাধ্যের মধ্যেও আপনি পছন্দমতো ম্যাট্রেস কিনতে পারবেন।

প্রত্যেকের যেমন শরীরের মাপ আলাদা, তেমনি প্রয়োজনীয়তাও আলাদা। একজন ভারী দেহের মানুষের সঙ্গে হালকা দেহের মানুষের ম্যাট্রেসের চাহিদা মিলবে না। এছাড়া বয়সের পার্থক্যও বড় বিষয়। এজন্য ম্যাট্রেস কেনার আগে আপনার শরীরের মাপের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আর সৌন্দর্যই ভালো ম্যাট্রেসের মাপকাঠি নয়। আপনাকে দেখতে হবে কোনটি আপনার শরীরের জন্য আরামদায়ক হবে। আপনি আগে কখনো যেমন একটি ম্যাট্রেস কিনেছিলেন, সেই একই মাপের ম্যাট্রেস কিনতে হবে, এমন কোনো বিষয় মাথায় রাখবেন না। বর্তমান সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী আপনাকে ম্যাট্রেস কিনতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ম্যাট্রেসও পরিবর্তন হচ্ছে, আধুনিক হচ্ছে। তাই পুরনো কেনার চেয়ে আধুনিক মডেলের কেনা বুদ্ধিমানের কাজ।

ম্যাট্রেস কেনার আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হলো, সেটা আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা। বাজারে হরেক রকমের ম্যাট্রেস আছে, যার সবটায় ঘুমিয়ে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য নাও পেতে পারেন। এজন্য বাজে বিষয় মনে হলেও কেনার আগে ম্যাট্রেসে অন্তত একবার শুয়ে দেখুন। বাসায় কিনে নিয়ে গিয়ে দেখলেন সেটা খুব বেশি নরম বা শক্ত, যা আসলে আপনার উপযুক্ত না। তাই টাকা নষ্ট করার চেয়ে দোকানে শুয়েই একবার পরখ করে নিন। আপনি যদি অনলাইনে ম্যাট্রেস কেনার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে ওই মডেলটির রিভিউ দেখে নিতে পারেন।

দোকানে পরখ বা অনলাইনে রিভিউ দেখে কিনলেও আপনি ম্যাট্রেসের ট্রায়াল বা রিটার্ন পিরিয়ড জেনে নিন। বেশির ভাগ দোকানি এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের সময়সীমা দিয়ে থাকেন। এটা এমন একটি সুযোগ, যার ফলে ঘুমিয়ে আরামদায়ক বা আপনার উপযুক্ত মনে না হলে ফেরত দিতে পারবেন বা পাল্টে নিতে পারবেন। এজন্য কেনার সময় দোকানির সঙ্গে বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলে নিন।

ম্যাট্রেস ইন্ডাস্ট্রিতে বিছানার দৃঢ়তার আদর্শ কোনো মাপকাঠি নেই। একেক কোম্পানির দৃঢ়তার একেক রকম মাপ। কোনো একটি কোম্পানিরফার্মমাপ আরেকটি কোম্পানিরএক্সট্রা ফার্মএকই রকম হতে পারে। কয়েকটি কোম্পানি সাধারণ বিবরণের মাধ্যমে র্যাংক করে থাকে, যেমন নরম, মাঝারি দৃঢ়। কিছু কোম্পানি পয়েন্ট আকারে র্যাংক করে থাকে। যেখানে থেকে পয়েন্ট মানে নরম গদি, থেকে মানে মাঝারি গদি সাড়ে থেকে ১০ মানে দৃঢ় গদি। কেউ কম দৃঢ় অর্থাৎ খুব বেশি নরম পছন্দ করতে পারেন আবার কেউ বেশি দৃঢ় পছন্দ করতে পারেন। এক্ষেত্রে ধরে নেবেন না যে অতিরিক্ত নরম মানেই আরামদায়ক। খুব বেশি নরম ম্যাট্রেসের চেয়ে দৃঢ় ম্যাট্রেস দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

পিলো টপ ম্যাট্রেস বর্তমানে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও ব্যয়বহুল ম্যাট্রেস আপনার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। মনে রাখবেন, আপনার পিলো টপ ম্যাট্রেস দ্রুত দেবে গিয়ে সমান হতে চলেছে, বিশেষ করে যদি আপনি ভারী হন। তবে আপনি যদি হালকা হন, তাহলে আপনার জন্য এটা উপযুক্ত হতে পারে।

বাজারে সাধারণত ট্র্যাডিশনাল ইনারস্প্রিং, মেমোরি ফোম দুটার মিশ্রণে হাইব্রিড ম্যাট্রেস পাওয়া যায়। এছাড়া স্লিপি নাম্বারের মতো সামঞ্জস্য এয়ার ম্যাট্রেসগুলোও বেশ জনপ্রিয়। ইনারস্প্রিং ম্যাট্রেসগুলো খুব সাধারণ অপেক্ষাকৃত কম ব্যয়বহুল। এটা বিছানায় ভালো সমর্থন দেয়, পুরো বিছানাজুড়ে সমান দৃঢ়তা সরবরাহ করে রোমাঞ্চবান্ধব। নেতিবাচক দিক থেকে ধরনের ম্যাট্রেসগুলো খুব বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। মেমোরি ফোম ম্যাট্রেসগুলো মোটামুটি ব্যয়বহুল। তবে যাদের জয়েন্ট বা পেশি ব্যথার সমস্যা আছে, তাদের কাছে এগুলো সেরা পছন্দ হতে পারে। মেমোরি ম্যাট্রেসগুলো গরম হতে পারে এবং খুব বেশি রোমাঞ্চবান্ধব নয়।

লেটেক্স ফোম ম্যাট্রেসগুলো মেমোরি ম্যাট্রেসের মতোই। তবে এটার মেমোরির চেয়ে বেশি বাউন্স দেয় রোমাঞ্চবান্ধব। যারা মেমোরি ফোমের গরম পছন্দ করেন না, তাদের কাছে লেটেক্সের ফোম ভালো পছন্দ হতে পারে। লেটেক্স ফোমে প্রাকৃতিক, সিনথেটিক মিশ্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অন্যদিকে হাইব্রিড ম্যাট্রিসে আপনি উপরের সব বৈশিষ্ট্যেরই ছোঁয়া পাবেন। একটি ভালো হাইব্রিড ম্যাট্রেস সবচেয়ে উন্নত ফোম ইনারস্প্রিং সরবরাহ করে। তবে খারাপ মানের হাইব্রিড ম্যাট্রেস আপনাকে ইনারস্প্রিং মেমোরির চেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা দিতে পারে। এয়ার ম্যাট্রেসগুলোর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এগুলোয় আপনি পছন্দমতো দৃঢ়তা ঠিক করে দিতে পারবেন।

 

সূত্র: দ্য স্প্রুস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন