কক্সবাজারে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্য

বণিক বার্তা প্রতিনিধি কক্সবাজার

দেশের সর্বদক্ষিণের জেলা কক্সবাজারে শীতকালীন সবজির আবাদ বাড়ছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মৌসুমে জেলাটিতে প্রায় সাড়ে আট হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মার্চ পর্যন্ত চলা মৌসুমে জেলায় প্রায় দেড় লাখ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদন হতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যেখানে এর আগের মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল লাখ ২০ হাজার ১৪২ টন সবজি। এছাড়া উৎপাদন উপযোগী আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

সবজি চাষী কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার জমি থেকে আগাম ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে সবজির ভালো দামের আশায় আগেভাগে সবজি চাষে নামেন কৃষকরা। এরই মধ্যে জেলাটিতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ শতাংশ সবজি আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মৌসুমে জেলার অধিকাংশ সবজির চাষ হয়েছে চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদরে। বাকি উপজেলায় ৪০ শতাংশ সবজি উৎপাদন হয়েছে। মৌসুমে ৩৪ প্রজাতির শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রায় কাজ করছেন জেলার কৃষকরা। হেক্টরপ্রতি ১০ জন করে প্রায় ৯০ হাজার চাষী শীতকালীন শাকসবজি চাষে মাঠে রয়েছেন। চলতি সবচেয়ে বেশি চাষ হওয়া সবজির মধ্যে রয়েছে আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, আখ, সরিষা, চীনাবাদাম, মসুর, মাষকলাই, ফেলন, অড়হর, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, মরিচ, তরমুজ, খিরা, বাঙ্গি, মূলা, লালশাক, পালংশাক, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, বরবটি, ঢেঁড়স, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, করলা, ফ্রন্সবিন, বাটিশাকসহ অন্যান্য সবজি।

বীজের পর্যাপ্ত সরবরাহ, সারের সহজপ্রাপ্তির কারণে এবার শীতকালীন ফসলের ফলন বাম্পার হয়েছে বলে জানান সদরের কয়েকজন কৃষক। বছর দুই একর জমিতে ফুলকপি বাঁধাকপি চাষ করেছেন সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়া গ্রামের ফুলকপি চাষী মিজানুর রহমান। তিনি জানান, গত বছর খুব ভালো ফলন হওয়ায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেছিলেন। বছরও ভালো ফলন দাম থাকায় মার্চের শেষ হতে প্রায় লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। তার মতো, গ্রামের ১০-১২ জন কৃষক একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, ঝিলংজায় বছর সবুজ সবজির বিল্পব ঘটেছে। বিশেষ করে বাঁকখালীর পাড়ে সবুজ সবজিতে ভরে গেছে। ভোরে বাংলাবাজারের বিভিন্ন অংশে পাইকারি খুচরা বিক্রেতারা সবজি কিনতে ভিড় জমান। জেলার বিভিন্ন বাজারে তাজা সবজি চলে যায় বাংলাবাজার থেকে।

কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড় পরিচর্যা, উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন, আগাম সবজির দাম ভালো থাকা, যথাযথ সার বীজ বাছাইয়ের কারণে মৌসুমে সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে বলে মনে করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কাশেম। তিনি জানান, শীতকালীন সবজির দাম শুরু থেকেই চড়া হওয়ার কারণে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। দাম পাওয়া সবজিসমূহের মধ্যে রয়েছে মূলা, মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, মুলাশাক। আগামী মার্চে মৌসুম শেষের আগে যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রোগবালাই না হয় তবে বছর চাষীরা শাকসবজি বিক্রি করে অনেক বেশি লাভ করতে পারবেন বলেও মনে করেন কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন