মোবাইল ব্যাংকিং সাবসিডিয়ারি করবে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রাহকদের শরিয়াহভিত্তিক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানের জন্য সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের পর্ষদ। গ্রিন মোর লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিটি গঠন করা হবে। তাছাড়া ব্যাংকটির পর্ষদ ব্যাসেল- বাস্তবায়নের জন্য সাত বছরে অবসায়নযোগ্য ৫০০ কোটি টাকা মুদারাবা সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এআইবিএল থার্ড মুদারাবা সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনসাপেক্ষে ইস্যু করা হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে একটি ইসলামিক ওয়ালেট চালু করেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। চালুর পর এক মাসেই ওয়ালেটটি গ্রাহকের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছে। এমএফএস সার্ভিস চালু হলে ওয়ালেট সার্ভিসটি আরো পূর্ণাঙ্গ হয়ে উঠবে। এমএফএস সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৫১ শতাংশ এবং গ্রিন মোরের ৪৯ শতাংশ শেয়ার থাকবে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মাসুদুল বারী বণিক বার্তাকে বলেন, গ্রিন মোর শতভাগ বাংলাদেশী মালিকানার ফিনটেক প্রতিষ্ঠান। আমরা তাদের কাছ থেকে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা নেব। শরিয়াহভিত্তিক পণ্য হিসেবে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসটিকে দেশে বিদেশে গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলাই আমাদের লক্ষ। এরই মধ্যে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছি। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসসি) কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর পুরোদমে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের কাযক্রম শুরু করতে পারব। বছরের এপ্রিল থেকেই আমরা এটি চালু করতে পারব।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি সাবসিডিয়ারি মিলেনিয়াম ইনফরমেশন সলিউশন লিমিটেডে নিজেদের শেয়ার ৫১ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনসাপেক্ষে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই নাগাদ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে তারা। এর আগে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সাবসিডিয়ারিটিতে নিজেদের বিনিয়োগ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্যাংকটির পর্ষদ।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ২৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭২ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সম্মিলিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২৭ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩০ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির সম্মিলিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ১৬ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৩৫ পয়সা, আগের বছর যা ছিল টাকা। ৩১ ডিসেম্বর সম্মিলিতভাবে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ২০ টাকা ৮০ পয়সা। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডাররা ১৫ শতাংশ নগদ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।

১৯৯৮ সালে তালিকাভুক্ত আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন দেড় হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন হাজার ৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে হাজার ১০৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৪৯ লাখ হাজার ১৮৫। এর মধ্যে ৩৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৯৭ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ডিএসইতে গতকাল আল-আরাফাহ্ ব্যাংকের শেয়ার সর্বশেষ ছিল ১৬ টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১৫ টাকা ৮০ পয়সা ২৩ টাকা ১০ পয়সা।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত দশমিক ১৩, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ৫১ দশমিক ২৫।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন