এনএবিইর সমীক্ষা

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে চাঙ্গা ভাবের সম্ভাবনা

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান সংকোচন সম্প্রসারণ এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর বিজনেস ইকোনমিকসের (এনএবিই) সমীক্ষায়। এটি দেশটির শ্রমবাজারের চাঙ্গা ভাব চলতি বছর কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। খবর রয়টার্স।

এনএবিইর যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ প্রান্তিকের ব্যবসা পরিবেশ সমীক্ষার মাসখানেক আগে এক সরকারি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে গত বছরের নভেম্বরে দেশটির কর্মসৃজন চার বছরের বেশি সময়ের নিচে নেমে এসেছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরিপ্রেক্ষিতে এনএবিইর ব্যবসা পরিবেশ সমীক্ষা প্রধান মেগান গ্রিন বলেন, এবারের সমীক্ষায় গত তিন মাসে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান সংকোচন সম্প্রসারণ নিয়ে যত কর্মকর্তা কথা বলেছেন, গত এক দশকে এমনটি কখনো হয়নি। চাহিদার তুলনায় কর্মী সরবরাহ কমায় এমন হয়ে থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা পরিবেশ নিয়ে পরিচালিত জরিপটিতে এনএবিইর ৯৭ জন সদস্য অংশ নেন, যারা নিজেদের কোম্পানি বা শিল্পের বিভিন্ন অবস্থা নিয়ে মতামত দিয়েছেন। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর চলতি বছরের জানুয়ারি পরিচালিত সমীক্ষায় বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিটির চতুর্থ প্রান্তিকের ব্যবসা পরিবেশ স্বল্পমেয়াদি পূর্বাভাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সমীক্ষা অনুযায়ী চতুর্থ প্রান্তিকে দেশটির সেবা, পণ্য উৎপাদন পরিবহন, ইউটিলিটিস, তথ্য যোগাযোগ শিল্পে কর্মসংস্থান কমেছে। অন্যদিকে কর্মসংস্থান বেড়েছে আর্থিক, ইন্স্যুরেন্স রিয়েল এস্টেট খাতে।

এদিকে বেকারত্বের হার নাগালের মধ্যে রাখতে কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি প্রয়োজনের চেয়েও যথেষ্ট শক্তিশালী রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে এনএবিইর সমীক্ষায়। তবে ২০১৮ সালের শেষের দিকে গত বছরের শুরুর দিকে দেশটির কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধিতে যে জোয়ার এসেছিল, উল্লিখিত প্রান্তিকে তা কমেছে।

গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে দেশটিতে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছিল সরকারি এক প্রতিবেদনে, যা এক দশকের মধ্যে বৃহত্তম হ্রাসকৃত সংশোধিত প্রাক্কলন। প্রাক্কলনটি উল্লিখিত সময়ে প্রতি মাসে দেশটিতে লাখ ১০ হাজারের পরিবর্তে লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় গত আগস্টে।

দেশটিতে পরিস্থিতি তৈরির পেছনে কর্মী স্বল্পতা চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধসহ সার্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা দায়ী বলে মনে করা হয়। কোম্পানিগুলোর অধিকাংশের মধ্যে অদক্ষ কর্মী স্বল্পতা বিপুল পরিমাণে বাড়লেও অর্ধেকের মতো কোম্পানিতে দক্ষ কর্মী স্বল্পতা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এনএবিইর সমীক্ষায়।

এদিকে কর্মী স্বল্পতা সত্ত্বেও মজুরি উল্লেখযোগ্য হারে না বাড়া সম্পর্কে কিছু তথ্য উঠে এসেছে এনএবিইর সমীক্ষায়। এতে অংশ নেয়া ৪৭ শতাংশ কর্মকর্তা নিজেদের কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন। পদোন্নতির জন্য নিজেদের বিদ্যমান কর্মীদের প্রশিক্ষণের কথা জানিয়েছে সমীক্ষায় অংশ নেয়া ৪৪ শতাংশ। এছাড়া প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলো শ্রম সাশ্রয়ী করতে বিনিয়োগের কথাও জানিয়েছে। কোম্পানিগুলোর শ্রম সাশ্রয়ী করার হার চলতি মাসে বেড়ে ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে। গত বছরের অক্টোবর জানুয়ারি হার ছিল যথাক্রমে ৩৪ ২২ শতাংশ।

দেশটির উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে গ্রিন বলেন, আমাদের সমীক্ষায় যেসব কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন, তাদের অধিকাংশ গত বছরজুড়ে চলা শুল্ক-পাল্টা শুল্ক পদক্ষেপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। সময় পণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর বিক্রি ঋণাত্মকে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে বলেও উঠে এসেছে এনএবিইর প্রতিবেদনে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন