পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও চীনের পিছুটানে ইউএইর দিকে ঝুঁকছে জিম্বাবুয়ে

বণিক বার্তা ডেস্ক

পশ্চিমা দেশগুলোর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা এবং বিনিয়োগ থেকে চীনের সরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দিকে ঝুঁকছে জিম্বাবুয়ে। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি পুনরায় উদ্ধারে উপসাগরীয় দেশটিকে ত্রাতা হিসেবে দেখছে আফ্রিকার দেশটি। খবর ব্লুমবার্গ।

কোম্পানি সরকারি তিনটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, জিম্বাবুয়ের জাতীয় তেল অবকাঠামো কোম্পানির (এনওআইসি) শেয়ার বিক্রিতে ইউএইর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দেশটি। ইউএইর কোম্পানিগুলো যেন জিম্বাবুয়ে থেকে অধিক স্বর্ণ ক্রয় করে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন এমনাংগাগোয়া সম্প্রতি জানান, ইউএইর বিনিয়োগকারীরা দেশটিতে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। গত বছর সাইক্লোনে আক্রান্ত হওয়ার পর জিম্বাবুয়েতে ত্রাণ তত্পরতা চালিয়েছে দুবাই। এক বছর আগে এক ঘোষণায় জিম্বাবুয়েতে দূতাবাস স্থাপনের নির্দেশনা দেন ইউএইর প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।

কয়েক দশক ধরেই জিম্বাবুয়ের অর্থনীতিতে অস্থিরতা চলছে। সরকারি প্রাক্কলন অনুযায়ী, গত বছর দেশটির অর্থনীতি শতাংশেরও বেশি সংকুচিত হতে পারে। অর্ধেকেরও বেশি মানুষের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। ৫০০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকে ডলারের বিপরীতে জিম্বাবুয়ে ডলারের অবমূল্যায়ন হয়েছে ৯০ শতাংশেরও বেশি।

দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লভিত্তিক এনকেসি আফ্রিকান ইকোনমিকসের এক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জি- ভ্যান ডার লিন্ড বলেন, বিনিয়োগ পেতে মরিয়া তারা (জিম্বাবুয়ে) দীর্ঘদিন ধরেই সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। কোন জায়গায় গিয়ে শেষ হবে তা জানি না। জিম্বাবুয়ে কীভাবে ইউএইর কাছে আকর্ষণীয় মনে হলো তা বুঝতে পারছি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্র বলছে, এনওআইসির ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছে জিম্বাবুয়ে।

ইউএইর তেল কোম্পানিগুলো বলছে, জিম্বাবুয়ের আগ্রহের ব্যাপারে তারা অবগত নয়। এমনকি ব্যাপারে মন্তব্যে রাজি হয়নি ইউএইর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সম্ভাব্য বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রেসিডেন্ট এমনাংগাগোয়া শুধু ইউএই নয়, প্রায় পুরো বিশ্ব চষে বেড়িয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রবার্ট মুগাবেকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর তিনি বিশ্বকে বার্তা দিতে চেয়েছেন, আফ্রিকার দেশটি ব্যবসায়ের জন্য উন্মুক্ত। রাশিয়ায় দুবার সফরে গিয়েছেন এবং তারা একটি প্লাটিনাম প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২০১৯ সালের মে মাস নাগাদ বিভিন্ন খাতে হাজার ৭০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি এলেও এখনো সে ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং জিম্বাবুয়ে সফর করলেও অবকাঠামোগত কয়েকটি প্রকল্পে বিনিয়োগ ছাড়া বড় কোনো বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দেয়নি বেইজিং।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন