বেজোসের ফোন হ্যাকিং

অ্যাপলের আইওএসকে দুষছে ফেসবুক

বণিক বার্তা ডেস্ক

-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেফ বেজোসের ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনায় আইফোনের অপারেটিং সিস্টেমকে (আইওএস) দায়ী করেছে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থা হ্যাক করা যায় না। খবর ইটিটেলিকম।

তদন্তকারীদের ধারণা, হোয়াটসঅ্যাপে ম্যালওয়্যারযুক্ত দশমিক এমবির একটি ভিডিও ফাইল রিসিভ করার পরই বেজোসের আইফোন হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। গত বছর একই পদ্ধতিতে ইসরায়েলভিত্তিক এনএসও গ্রুপ পেগাসাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে হাজার ৪০০ জন সাংবাদিক মানবাধিকারকর্মীর ফোন হ্যাক করেছিল।

ক্লেগ হ্যাকের ঘটনাকে ম্যালিশাস ইমেইল খোলার সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, যখন আপনি এটি খুলবেন, তখনই এটি প্রাণ লাভ করে।

বেজোসের ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনা তদন্ত করছে এফটিআই কনসালটিং। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ভিডিও ফাইলটি রিসিভ করার পরই বেজোসের ফোন থেকে অস্বাভাবিকভাবে বৃহৎ আকারের তথ্য স্থানান্তর শুরু হয়। এসব তথ্যের মধ্যে বান্ধবী লরেন সানচেজকে প্রেরিত অন্তরঙ্গ বার্তাও ছিল। ক্লেগের মতে, বেজোসের ফোনটির অপারেটিং সিস্টেম কিছু একটা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল।

ফেসবুকের বক্তব্যের বিষয়ে অ্যাপল কোনো মন্তব্য করেনি। এনএসও গ্রুপ বেজোসের ফোন হ্যাকিংয়ের ঘটনায় যুক্ত থাকার কথা নাকচ করে দিয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন সুবিধা দিয়ে থাকে। এর মানে হলো, শুধু প্রেরক গ্রহণকারীই বার্তা দেখার সুযোগ পান। তবে এর আগে মিসড কলের মাধ্যমে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করে এনএসও গ্রুপ হোয়াটসঅ্যাপের ভিডিও কল সিস্টেম হ্যাক করেছিল।

টেক পলিসি মিডিয়া-বিষয়ক পরামর্শক প্রশান্ত কে রায়ের মতে, এন্ড টু এন্ড এনক্রিপটেড অ্যাপ তথ্যের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। বৃহৎ আকারের কম্পিউটার ব্যবস্থা ছাড়া এর বার্তা বা কল হ্যাক করা যায় না। তবে কেউ যদি আপনার ফোনটি হাতে পায় বা সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দিতে পারে, তখন কোনো ধরনের এনক্রিপশন কাজ করে না। কারণ আপনার পুরো হ্যান্ডসেটই ডিক্রিপট হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ফোন হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিলেন জেফ বেজোস। ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

এর আগে গত বছর বেজোসের সঙ্গে সাবেক টিভি উপস্থাপিকা লরেন সানচেজের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়ে একাধিক সিরিজ প্রতিবেদন করে প্রকাশ করে দ্য ন্যাশনাল এনকোয়ারার। বেজোসের পাঠানো অন্তরঙ্গ টেক্সট বার্তার সূত্র ধরে ওই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হয়। এর পরই বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস মার্কিন ট্যাবলয়েড সাময়িকী ন্যাশনাল এনকোয়ারারের মালিকের বিরুদ্ধেনোংরা ছবিব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগ করেন।

ওই সময় জেফ বেজোস অভিযোগ করেন, এনকোয়ারারের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান মিডিয়া ইনকরপোরেশনের (এএমআই) পক্ষ থেকে তাকে তথ্য চুরির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু ট্যাবলয়েড পত্রিকাটি কীভাবে তার ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ করেছে, সে বিষয়ে তদন্ত করতে আগ্রহী তিনি।

এদিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জেফ বেজোসের ফোন হ্যাকিংয়ের নেপথ্যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নয়; বরং তার প্রেমিকা লরেন সানচেজের ভাই সম্পৃক্ত। হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার পর জেফ বেজোস তার প্রেমিকা লরেন সানচেজের সম্পর্ক নিয়ে যে বার্তাগুলো ফাঁস হয়েছিল, সেগুলো লরেন নিজে তার ভাই মাইকেল সানচেজকে পাঠিয়েছিলেন বলে প্রমাণ পেয়েছেন আইনজীবীরা। যেগুলো পরে ন্যাশনাল এনকোয়ারারের কাছে বিক্রি করেন মাইকেল সানচেজ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন