ইশরাকের প্রচারণার সময় সংঘর্ষ আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারের সময় গতকাল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর গোপীবাগ থানা এলাকায় প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

গতকাল বেলা ১টার দিকে রাজধানীর টিকাটুলী মোড় থেকে ইশরাক হোসেন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের গলিতে ঢোকার সময় কলেজের মূল ফটকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইশরাকের মিছিল যখন টিকাটুলী হয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ব্যাডমিন্টন প্রতীকের রোকন উদ্দিন আহমেদ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী লাভলী চৌধুরীর কর্মীরা ওই রাস্তার মোড়ে উপস্থিত হন। দুই পক্ষই স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় উভয় পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ছোড়া হয় কয়েক রাউন্ড গুলিও। তবে এ সময় কেউ গুলিবিদ্ধ হননি। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের পর ইশরাকের কর্মী জাহিদ ইকরাম ফয়সল, বিল্লাহ হোসেনসহ ১৪-১৫ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মীদের ইয়াছিন আরাফাত রকি, সোহরাব হোসেন , মশিউর, রেজুয়ান ইসলাম রাতুল, মো. রমজান ও রাসেলসহ আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষের সময় টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক আশরাফুল ইসলামও আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষ শেষে গোপীবাগে নিজের বাড়ির সামনে ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে হাটখোলা থেকে টিকাটুলী হয়ে আমার বাসার দিকে ফিরছিলাম। আমার বাসা থেকে মাত্র ২ মিনিট দূরে ছিলাম। আমাদের ফেরার রাস্তার পাশে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং থেকে আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। এ নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর ক্যাম্প ছিল। এ প্রার্থীর ক্যাম্প থেকে একদল যুবক বড় বড় ইট নিয়ে আমাদের ওপর নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন বিএনপি কর্মীর পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের ক্যামেরাও ভেঙে যায়।

অন্যদিকে পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ক্যাম্পের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ ইশরাকের লোকজন আমাদের নির্বাচনী ক্যাম্পের দরজা ভেঙে আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় ইশরাকের লোকজন আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে, তাদের হামলায় আমাদের লোকজন আহত হয়েছে। আমাদের কেউ হামলায় ছিল না।

ইশরাক নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করায় অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের ঘটনা এড়ানো যায়নি বলে জানান ওয়ারী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) সুদীপ কুমার সাহা। তিনি বলেন, ইশরাক হোসেনের এ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের কথা ছিল বিকাল ৫টায়। সে অনুযায়ী পুলিশকে তারা একটি চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তারা বেলা ১টায় ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন, যা পুলিশকে জানাননি। ফলে পুলিশের কোনো প্রস্তুতি ছিল না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন