স্বাগতিক
পাকিস্তানের বিপক্ষে চলতি টি২০ সিরিজে প্রথম ম্যাচে কিছুটা লড়াই করেছিল বাংলাদেশ।
ম্যাচ জিততে ২০তম ওভারের তৃতীয় বল পর্যন্ত খেলতে হয়েছিল স্বাগতিকদের। হার ৫
উইকেটের ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিরোধহীন অবস্থায় আত্মসমর্পণ করেছে
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। হার ৯ উইকেটের ব্যবধানে। এমনই অবস্থায় লাহোরের গাদ্দাফি
স্টেডিয়ামেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ হারলেই
হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুববে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
বাংলাদেশের হার
মূলত দলে পাওয়ার হিটিং ব্যাটসম্যানের ঘাটতি। প্রথম ম্যাচে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল
ও মোহাম্মদ নাইম ১১ ওভার ব্যাটিং করে সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন মোট ৭১ রান। হাতে ৫
উইকেট থাকার পরও বাংলাদেশের ইনিংস থমকে গিয়েছিল ১৪২ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম
ব্যাট করেন ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত। ৫৩ বল খেলে সংগ্রহ করেন ৬৫ রান। ৬ উইকেট হারিয়ে
বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল মোটে ১৩৭ রান। তামিমের মন্থর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে যোগ হয়
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত লিটন দাস, আফিফ হোসেন,
সৌম্য সরকাররাও। লিটন, আফিফ,
সৌম্য সবাই খেলেন ওপেনিং
কিংবা টপ অর্ডারে। যদিও এ সিরিজে লিটন ব্যাটিং করেছেন ৩ ও ৪ নম্বর পজিশনে। দুই
ম্যাচে আফিফ নেমেছেন যথাক্রমে ৫ ও ৬ নম্বর পজিশনে। সৌম্য ব্যাট করেছেন ৬ ও ৭
নম্বরে। হার্ড হিটারদের, বিশেষ করে সৌম্যর মতো প্রমাণিত স্ট্রোক মেকারকে
পরে নামানো নিয়ে কথা উঠেছে বিস্তর।
দলে পাওয়ার
হিটারের ঘাটতির কারণেই সৌম্যকে এত নিচে খেলানো হয় বলে মত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের
প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। শনিবার ম্যাচ শেষে বলেন, ‘সৌম্য দুর্দান্ত একজন ব্যাটসম্যান। টপ অর্ডারে সে অনেক সুযোগও পেয়েছে। তবে
আমরা এমন কয়েকজন ব্যাটসম্যান চাচ্ছি যারা বল মাঠের বাইরে পাঠাতে পারে। বাংলাদেশ
ক্রিকেটে এ ধরনের ব্যাটসম্যানের খুবই অভাব। আমরা ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন নিয়ে
ভাবছি। এগিয়ে-পিছিয়ে খেলিয়ে কাদের পাওয়ার হিটিংয়ে কাজে লাগানো
যায়, সেটিই চেষ্টা করছি।’
পাকিস্তানের
বিপক্ষে বাংলাদেশের এমন অসহায় অবস্থাকে দুই দলের স্কিলের পার্থক্যকেই বড় করে
দেখছেন ডমিঙ্গো। তার ভাষায়,
এ মুহূর্তে দুই দলের
স্কিলে বিশাল পার্থক্য। এ কারণেই ওরা কেন এক নম্বরে আর আমরা ৯-এ। পাকিস্তানের
সমতায় উঠতে চাইলে এখনো আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। বাংলাদেশের প্রধান কোচ বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পেরেছিলাম।
দ্বিতীয় ম্যাচে সেটাও পারিনি। আমি মনে করি উইকেট ছিল ১৫৫ রানের। প্রথম ম্যাচে
আমাদের স্কোরবোর্ডে কম ছিল ১৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে কম ছিল ২৫ রান।’ সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের শূন্যস্থান পূরণ করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান
ডমিঙ্গো।
প্রথম দুই
ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো কমতি থাকছে না। একাধিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন ডমিঙ্গো, ‘সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। আমাদের তিন খেলোয়াড় এখনো মাঠে নামার
সুযোগ পায়নি। তাদের সুযোগ দিতে হবে।’ এ সফরে এখনো মাঠে নামার সুযোগ পাননি টপ অর্ডার
ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত এবং দুই পেসার অভিজ্ঞ রুবেল হোসেন ও তরুণ পেসার
হাসান মাহমুদ। আজ প্রথম দুই ম্যাচেই অনুজ্জ্বল মুস্তাফিজ যে বাদ পড়ছেন, তা অনেকটা নিশ্চিত। প্রথম ম্যাচে ১ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪১
রান দেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ ওভারে তার খরচ ২৯ রান। হাসানের সঙ্গে
রুবেলকেও যদি খেলানো হয়, তবে সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন পেসার শফিউল
ইসলাম। শান্তকে জায়গা দিতে হলে হারাতে হতে পারে আগের ম্যাচে ওয়ান ডাউনে খেলা
মেহেদী হাসানকে।
এদিকে গতকাল
লাহোরে শিষ্যদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ
ওটিস গিবসন।