অর্ধবার্ষিক

বিএসআরএমের দুই কোম্পানির মুনাফায় বড় পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের দুই কোম্পানি বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলের মুনাফায় বড় ধরনের পতন হয়েছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিএসআরএম লিমিটেডের ৪১ শতাংশ এবং বিএসআরএম স্টিলের কর-পরবর্তী মুনাফা কমেছে প্রায় ৭৯ শতাংশ। মূলত ব্যবসা কমে যাওয়ার পাশাপাশি মুনাফা মার্জিন কমে যাওয়ার কারণে কোম্পানি দুটির কর-পরবর্তী মুনাফা কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে বিএসআরএম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানি সচিব শেখর রঞ্জন কর বণিক বার্তাকে বলেন, মূলত ব্যবসা কমে যাওয়ার কারণে আমাদের রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। আগে আমাদের যে পরিমাণ বিক্রি হয়েছে, এবার তার চেয়ে অনেক কম হয়েছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যে মন্থরতা চলছে, তার প্রভাব পড়েছে এ খাতের ব্যবসায়। তাছাড়া এ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে বাজার ধরতে অনেকেই পণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে আমাদের পণ্যের দামও কমাতে হয়েছে। এ কারণে আমাদের মুনাফা মার্জিন আগের চেয়ে কমেছে। সবকিছু মিলিয়েই চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে আমাদের ব্যবসা ভালো হয়নি। শুধু বিএসআরএমেরই নয়, এ খাতের সব কোম্পানির ব্যবসা এবার ভালো হয়নি। আশা করছি বছরের বাকি সময়টায় ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে।

প্রথমার্ধের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে বিএসআরএম লিমিটেডের সমন্বিত বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। আর এ সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬১ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫ পয়সা, যেখানে এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৬১ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বিএসআরএম লিমিটেডের সমন্বিত বিক্রি হয়েছে ৯৭৫ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। আর আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি টাকায়, যা এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ২৪ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯৭ টাকা ৫৪ পয়সা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএসআরএম লিমিটেডের পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ৭ টাকা ৮৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ টাকা ৭৭ পয়সা।

চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে বিএসআরএম স্টিলের বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৩১ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা, যা এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৭৯ কোটি টাকা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১০ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৮ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৫৫ টাকা ৩১ পয়সায়।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএসআরএম স্টিলের পরিচালনা পর্ষদ।

এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৬০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৭৯ পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন