নওগাঁর পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশীর মৃতদেহ তিনদিন পর ফেরত দিলো বিএসএফ। গতকাল শনিবার রাতে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে নিহত রণজিত কুমার (২৪) ও কামাল আহমেদ (৩২) নামের দুই ব্যক্তির মৃতদেহ ফেরত দেয়া হয়।
নিহতরা হলেন- পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের কাঁটাপুকুরের মৃতু জিল্লুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন এবং বিষ্ণপুর বিজলীপাড়ার শুকরা কুমারের ছেলে রণজিত কুমার। মৃতদেহ দুটি বিজিবি পোরশা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বিজিবি ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে মফিজুল ইসলাম, কামাল হোসেন ও রণজিত কুমারসহ ১০-১২ জনের একটি দল পোরশা দুয়ারপাল সীমান্ত এলাকার ২৩১/১০(এস) মেইন পিলারের নীলমারী বিল দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে গরু আনতে যায়।
গরু নিয়ে বাংলাদেশে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভারতের ক্যাদারীপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ জোয়ানরা গরু ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এসময় অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও তিন গরু ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়। এতে গরু ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের ২০০গজ অভ্যন্তরে তার মৃতদেহ পড়ে ছিল। আর গরু ব্যবসায়ী রনজিত কুমার ও কামাল হোসেন এর মৃতদেহ ভারতের ৮০০ গজ অভ্যন্তরে পড়ে ছিল। পরে দুপুর দেড়টার দিকে মৃতদেহ দুটি বিএসএফের সদস্যরা নিয়ে যায়।
এ নিয়ে ঘটনার দিন বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দুয়ারপাল সীমান্তের শূন্যরেখায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএসএফরা তিন বাংলাদেশীকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে। বৈঠকে দুইজনের মৃতদেহ যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে ফেরত দেয়ার অঙ্গিকার করে বিএসএফ সদস্যরা। নিহতের তিনদিন বিএসএফ দুই বাংলাদেশীর মৃতদেহ ফেরত দেয়।
পোরশা উপজেলার হাঁপানিয়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মোখলেছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিএসএফের কাছ থেকে মৃতদেহ দুটি পাওয়ার পর পোরশা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম বলেন, বিজিবি থেকে মৃতদেহ দুটি থানায় হস্তান্তর করা হয়। মৃতদেহ দুটি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
