সূচক ও লেনদেনে বড় উল্লম্ফন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগের সপ্তাহগুলোর ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচক ডিএসইএক্সের পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে। একইভাবে বেড়েছে দেশের আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ও লেনদেন।

গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স বেড়েছে চার কার্যদিবসে। আর কমেছে এক কার্যদিবসে। রোবরার একদিনেই ডিএসইএক্সে যোগ হয় ২৩৩ পয়েন্ট। ৪ হাজার ১৪৯ পয়েন্ট নিয়ে রোববার লেনদেন শুরু করা সূচকটি দিন শেষে ছিল ৪ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে। সোমবারও সূচকের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত ছিল। এদিন সূচক বাড়ে ৫২ পয়েন্ট। মঙ্গলবার বাজার সংশোধনের অংশ হিসেবে পয়েন্ট কমে ২৬। সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে ফের ঊর্ধ্বমুখী হয় শেয়ারবাজার। এ দুদিন ডিএসইএক্সে যোগ হয় যথাক্রমে ৩২ ও ৭৩ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৫১৩ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৬৪ পয়েন্ট বা ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

ডিএসইএক্সের পাশাপাশি ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গত সপ্তাহে ১৩৭ পয়েন্ট বা ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৫৪৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪০৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে পাঁচ কার্যদিবসে ৯৫ পয়েন্ট বা ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ১ হাজার ৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৯৪০ পয়েন্ট। চলতি বছরের প্রথম দিনে ডিএসইতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করা নতুন সূচক সিডিএসইটি বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে অবস্থান করছে ৯২৩ পয়েন্টে, আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৮৪৫ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২৬৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৩২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ৩২৮টির, কমেছে ২৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল সাতটির।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। ৯ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংক, বস্ত্র ও সাধারণ বীমা খাত। এছাড়া ৭ শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে ছিল সিমেন্ট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।

আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। এর পরের অবস্থানে ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষে ছিল যথাক্রমে এসএস স্টিল লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, গ্রামীণফোন লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড, এডিএন টেলিকম লিমিটেড ও এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

সমাপনী দরের ভিত্তিতে ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল যথাক্রমে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) লিমিটেড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, জেমিনি সি ফুড লিমিটেড, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ফিনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও বাংলাদেশ ল্যাম্পস লিমিটেড।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স ৯ দশমিক ২০ শতাংশ বা ৭০৩ পয়েন্ট বেড়ে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৮ হাজার ৩৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৭ হাজার ৬৩৪ পয়েন্ট। এছাড়া নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক সিএসই৩০ ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ বা ৯৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৮৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১০ হাজার ৮৬৬ পয়েন্ট।

সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ১৬৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ৩০৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৬৫টির, কমেছে ২৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১২টির বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন