তাকে পাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল ৩৯টি ক্লাব। কিন্তু সবাইকে টপকে ১৯ বছর বয়সী আর্লিং ব্রাট হালান্ডকে দলে টেনে নেয় জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ইউরোপব্যাপী ভীষণ চাহিদার পরও নরওয়েজিয়ান এ তারকাকে কিনতে ডর্টমুন্ডের খরচ পড়ে মাত্র ২০ মিলিয়ন ইউরো। তাকে নিয়ে কেন এতটা উন্মাদনা, তা প্রথম দুই ম্যাচেই বুঝিয়ে দিলেন হালান্ড। প্রথম দুই ম্যাচেই করলেন পাঁচ গোল। অভিষেক ম্যাচে মাত্র ২৩ মিনিটে তুলে নেন হ্যাটট্রিক। তবে সেটি যে নিছক চমক ছিল না তার প্রমাণ দিলেন পরের ম্যাচেই। কোলনের বিপক্ষে ৫-১ গোলো জয়ে জোড়া গোল করেন হালান্ড। সে সঙ্গে অন্য দলগুলোর আফসোসও যেন কিছুটা বাড়িয়ে দিলেন তিনি। একটু বাড়তি চেষ্টা করলেই যে পাওয়া যেত এ গোলমেশিনকে।
তবে বাকি দলগুলোর আফসোসের বিপরীতে ডর্টমুন্ড শিবিরে এখন কেবলই আনন্দ। ম্যাচ শেষে নিজের উচ্ছ্বাস গোপন রাখতে পারলেন না দলটির অধিনায়ক মার্কো রিউস। তিনি বলেন, ‘আর্লিংয়ের
জন্য এটা স্রেফ বিস্ময়কর। দুই ম্যাচে পাঁচ গোল। বিশেষ করে ঘরের মাঠে! এ কারণেই আমরা তাকে দলে ভিড়িয়েছি।’
এমনকি হালান্ডের আসার মধ্য দিয়ে দলের উন্নতিও দেখতে পাচ্ছেন রিউস, ‘এটা
সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের জন্য দারুণ এক পদক্ষেপ।’
প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও মূলত বেঞ্চ থেকে শুরু করেন হালান্ড। থরগান হ্যাজার্ডের পরিবর্তে তিনি মাঠে নামেন ৬৫ মিনিটে। ততক্ষণে অবশ্য ৩-১ গোলে এগিয়ে ডর্টমুন্ড। এরপর হালান্ড নেমেই যেন আগুনে রূপ নেন। ৭৭ মিনিটে আদায় করে নেন দলের চতুর্থ ও নিজের প্রথম গোল। ১০ মিনিট পর হালান্ড ফের লক্ষ্যভেদ করলে ডর্টমুন্ডের লিড গিয়ে দাঁড়ায় ৫-১ গোলে। এ ব্যবধানে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়ে সিগন্যাল ইদুনা পার্কের দলটি।
হালান্ডকে শুরু থেকে না খেলানোর কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল কোচ লুসিয়ান ফাভরের কাছে। তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বরে
সে চোটের কারণে অনুশীলন করতে পারেনি। যে কারণে তাকে নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে। এখনো শুরু থেকে খেলার জন্য প্রস্তুত না সে। তাকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে।’
অবশ্য অল্প সময় খেলেই দলের কাজ করে দিতে পারছেন তিনি, তাই বেশি সময় খেলানোর দরকারইবা কী! এ গোলমেশিন অবশ্য বেশি সময় বেঞ্চে কাটাতে পছন্দ করবেন না। আর হালান্ড শুরু থেকে খেললে কী রায়ট ঘটতে পারে সেই দুঃস্বপ্নই হয়তো দেখছে প্রতিপক্ষ ক্লাবগুলো।
তবে ডর্টমুন্ডে নয়, হালান্ড প্রথম আলোচনায় আসেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দিয়ে। যেখানে ৮ গোল করে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। এর মাঝে অভিষেকে করেন হ্যাটট্রিকও। মূলত এ পারফরম্যান্স দিয়েই সবার নজরে আসেন। এরপর শীতকালীন দলবদলে তাকে পেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে বড় ক্লাবগুলো। শুরুতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নাম শোনা যাচ্ছিল জোরেশোরে। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে নিরাশ করে হালান্ড চলে আসেন ডর্টমুন্ডে।
বিবিসি ও এএফপি