মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

তানিম আহমেদ গোপালগঞ্জ থেকে

দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করি। আমরা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। এটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।

গতকাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলের কার্যনির্বাহী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের এক যৌথসভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও উদ্যোগ নিয়েছে। মুজিব বর্ষ ঘিরে মানুষের উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে হত্যাকারীরা তার নাম মুছে দিয়েছিল। আজকে সেই নামটি আবার উচ্চারিত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নাম আর কখনো কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। কারণ জাতির পিতা সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করেছেন। এ দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্য তিনি কাজ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৪ বছরের সংগ্রাম ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ, দুই লাখ মা-বোন আত্মত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাদের আত্মত্যাগকে অর্থবহ করে তুলতে হবে।

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়ন প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে। আপনারা জানেন, এরই মধ্যে দেশের দারিদ্র্য হার ২০ দশমিক ৫ ভাগ নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে আমরা নিরলস  কাজ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মনে করি, আজকে অর্থনৈতিক যে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, তার সুফল একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর এ লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে চলতে হবে। এ বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবএটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকায় দলের কয়েকজন নেতা টুঙ্গিপাড়ায় যেতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে যারা কাজ করছেন, তাদের যাওয়ার দরকার নেই। বাকিদের নিয়ে আবার আসব।

পরবর্তী সময়ে নোটিস নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সভা করা হবে।

এর আগে গতকাল সকালে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টার থেকে বাসযোগে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। আর দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা কয়েকজন সফরসঙ্গী নিয়ে  বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়ায় যান। দুপুর ১টার দিকে সেখানে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে দলীয় নেতাদের নিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করে কুরআন পাঠ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তিনি দলের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধা জানানোর সফরে বাসযোগে যাতায়াতের নিয়মটি সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন