মুজিব বর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১৪
হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম
মোজাম্মেল হক। গতকাল বিকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও বালাগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা
কমপ্লেক্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা জানান তিনি।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের
বাড়ি নির্মাণের জন্য ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব বাড়ি
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল
ইসলামের সভাপতিত্বে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো
বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হবে। একটি বাড়ি নির্মাণে
ব্যয় হবে ১৬ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, আগামী
মার্চ মাসে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প
শোনানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। কোনো কেজি স্কুল,
প্রাইমারি,
হাইস্কুল ও মাদ্রাসায় নিয়মিত জাতীয় পতাকা
উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়া না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের
রণাঙ্গনের বীরত্ব গাথা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি রাজাকার, আল
শামস ও জামায়াতে ইসলামের ভূমিকা কী ছিল,
তাও তুলে ধরা হবে। শিক্ষার্থীরা এ ইতিহাস থেকে
জানতে পারবে তারা কোন পক্ষে যাবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, নিজেদের
চেতনা কেবল নিজেদের মধ্যে ধরে রাখলে চলবে না। আপনারা জয় বাংলা স্লোগান দিচ্ছেন, আপনার
সন্তান, আপনার ভাই কী স্লোগান দিচ্ছে,
কোন পথে যাচ্ছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে
১০০ নম্বর অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আগামীতে
বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় ৫০ নম্বর থাকবে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এবং আরো ৫০
নম্বর থাকবে পূর্ববর্তী ২৪ বছরের সংগ্রামের ইতিহাস বিষয়ে।
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রণালয়
জীবিত প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য ধারণের ব্যবস্থা করবে। ১৫-২০ মিনিটের ভিডিও
ধারণের মাধ্যমে তার মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকা ফুটে উঠবে।
মুজিব বর্ষে মুক্তিযুদ্ধ ও
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে মন্ত্রণালয়ের বেশকিছু উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে
মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে মারা যাওয়া প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে
পাকাকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে ১০০ বছর পরও বীর সেনানীদের কবর মানুষ চিনতে
পারে। এছাড়া বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিত করে একই নকশায় সংরক্ষণ, যেসব
স্থানে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ হয়েছে,
তা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা
ও নেতৃত্বের গুণাবলির বর্ণনা দিয়ে বলেন,
তিনি দেশকে স্বাধীন করে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে
চেয়েছিলেন। তার আগেই তাকে হত্যা করে দেশকে অনেক পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা
শেখ হাসিনা ৪০ বছর পর হলেও রাজাকারদের বিচার করেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসিতে
ঝুলিয়েছেন। এখন বঙ্গবন্ধু হত্যার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের
মুখোমুখি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস
সামাদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ,
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান
মুক্তিযোদ্ধা মুস্তাকুর রহমান মফুরস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।