শান্তি ও
শৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে দেশকে সন্ত্রাস,
জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত
করে আরো এগিয়ে নেয়ার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেনাবাহিনীর শীতকালীন অনুশীলন-প্রশিক্ষণ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে আয়োজিত
প্রীতিভোজে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ সংকল্প পুনর্ব্যক্ত
করেন। তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও
দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। খবর বাসস।
বক্তব্যে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, নিরাপদে থাকুক,
উন্নত জীবন পাক; সে লক্ষ্যই আমরা বাস্তবায়ন করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী যাতে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে এবং বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে
পারে, সেভাবেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে
যাচ্ছি। যার শুভফল এরই মধ্যে সবাই পাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে
বলেন, বহু দেশে শান্তি স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখার
পাশাপাশি সামাজিক কাজেও যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী
ভূমিকা রাখছে।
দেশের অনেক উন্নয়নকাজে সম্পৃক্ত হয়ে সেনাসদস্যরা ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক উন্নয়নের কাজ তাদের দিয়ে আমরা করাতে পারছি এবং তারা করে যাচ্ছেন। এভাবে একদিকে যেমন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অনেক অবদান রেখে যাচ্ছেন আমাদের সেনাসদস্যরা।
এজন্য সব
সেনাসদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, অন্য কোনো দেশের সৈনিকরা ততটা মানবিকতা দেখায় না, যতটা আমরা বাঙালিরা দেখাতে পারি। কাজেই সেইদিক থেকে আমি মনে
করি প্রশিক্ষণ এবং সমরাস্ত্রের দিক থেকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত
আমাদের সশস্ত্র বাহিনী হবে। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি এবং উদ্যোগ
নিয়েছি।
বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশন আয়োজিত এ প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর শীতকালীন
প্রশিক্ষণ অনুশীলন (মহড়া)
‘অপারেশন বিজয় গৌরব’ প্রত্যক্ষ করেন।
বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৬৬ পদাতিক ডিভিশন এ শীতকালীন
প্রশিক্ষণ অনুশীলনের আয়োজন করে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তিন বাহিনীর সম্মিলিত এ মহড়ায় অংশ নেন।
স্থানীয় সংসদ
সদস্য, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর
সচিব এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার উপকূলীয়
দ্বীপ স্বর্ণদ্বীপে (আগের নাম জাহাইজ্যার চর) পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম ও ৩৩
পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী তাকে স্বাগত জানান।
পরে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. শামসুল হক এবং প্রকৌশল বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ইবনে
ফজল শায়েখুজ্জামান দ্বীপের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী
স্বর্ণদ্বীপে সেনাবাহিনী নির্মিত ও বাস্তবায়িত তিনটি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার, পরিকল্পিত বনায়ন প্রকল্প এবং এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ
প্রকল্প উদ্বোধন করেন।