কোটি টাকা আত্মসাত : ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ২ জনের কারাদণ্ড

দুর্নীতির মাধ্যমে এক কোটির অধিক টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্র্যাক ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা সুকুমার রায়সহ ২ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত অপর আসামি হলেন, মেসাস নাফিসা ট্রেডার্সের মালিক মো. নুর আলম হক প্রামাণিক।

রায়ে দণ্ডিত পলাতক সুকুমারের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৬৯ লাখ ২ হাজার ২৮৪ দশমিক ৩৮ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন। অন্যদিকে নুর আলম হক প্রামাণিকের তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭০ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন।

রায় ঘোষণার সময় নুর আলম হক আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সুকুমার রায় পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন।

২০১৬ সালের ২৪ জুলাই মাসে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক এ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি সুকুমার রায় ২০০৮ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রেড-১ অফিসার হিসাবে ব্র্যাক ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। উক্ত ব্যাংকে তার নিজ নামে একটি হিসাবও ছিল। এছাড়া অপর আসামি নূর আলম মেসার্স নাফিসা ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী হিসাবে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট ব্র্যাক ব্যাংক সৈয়দপুর শাখায় একটি হিসাব খোলেন।

আসামি নূর আলম ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৪ লাখ টাকার দুটি ডিডি ক্লিয়ারিং হাউজে ইউনিলিভার বাংলাদেশের অনুকুলে প্রদানের জন্য ব্যাংক কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা কাছে জমা দেন। একই বছর ২১ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের একটি ২৩ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার ওই একই প্রতিষ্ঠানের নামে আরেক ব্যাংক কর্মকর্তা জয়দেব মুখার্জির কাছে জমা দেন।

তানিয়া এবং জয়দেবের সিনিয়র কর্মকর্তা আসামি সুকুমার রায় সেই ডিডি এবং পে-অর্ডারের টাকা ইউনিলিভারের নামে জমা না করে আসামি নুর আলমের নামের হিসাবেই জমা করেন। একইভাবে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩০ লাখ টাকার একটি ডিডি তিনি নিজের হিসাবে জমা করেন। এই জমাকৃত অর্থগুলোর মধ্যে ওই বছরেরই ২৪ সেপ্টেম্বর আসামি সুকুমার ২৫ লাখ টাকা এবং আসামি নুর আলম ৭৫ লাখ টাকা নিজ নিজ হিসাব থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। 

এভাবে বিভিন্ন সময় আসামিরা অবৈধভাবে তাদের হিসাবে জমা করা ১ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫৫ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।

মামলাটিতে ২০১৭ সালের ২০ মার্চ দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল হক আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছর ৮ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় আদালত দুদকের পক্ষে ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন