বলা চলে, বিষণ্নতা ও চা পানের মধ্যে সম্পর্কটি অনেকটা বিপরীতমুখী। অন্তত সাম্প্রতিক এক গবেষণা তা-ই বলছে। এতে দেখা গেছে, নিয়মিত চা পানে কমে বিষণ্নতার আশঙ্কা, বিশেষ করে বৃদ্ধাবস্থায়। খবর মেডিকেল নিউজ টুডে।
বিষণ্নতা এখন পৃথিবীব্যাপী স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকদের জন্য মারাত্মক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বয়স্কাবস্থায় মানসিক-শারীরিক সব ধরনের অসুস্থতার কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে বিষণ্নতা। বিশ্বব্যাপী ষাটোর্ধ্ব বয়সী মানুষদের মধ্যে ৭ শতাংশই এখন বড় ধরনের বিষণ্নতাজনিত বৈকল্যে ভুগছেন।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর (এনইউএস) ও চীনের সাংহাইভিত্তিক ফুদান ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সম্প্রতি এ বিষণ্নতা প্রতিরোধের সম্ভাব্য একটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন। গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, বয়স্কাবস্থায় নিয়মিত চা পানের সঙ্গে বিষণ্নতার মাত্রা হ্রাস পাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় পাওয়া ফলাফল বিএমসি গেরিয়াট্রিকস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে গত বছরের জুনে এনইউএসের আরেকটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, চায়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সক্ষমতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়া ওই গবেষণায় আরো উঠে এসেছিল, চা এবং এর কিছু উপাদান ক্যাটেচিন, এল-থিয়ানিন ও ক্যাফেইন মানসিক অবস্থা, মস্তিষ্কের সক্ষমতা, হূদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্য ইত্যাদির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি তা ক্যান্সার ও মৃত্যুঝুঁকি প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক গবেষণায় মনোযোগ দেয়া হয় বিষণ্নতা প্রতিরোধে চায়ের কার্যকারিতার ওপর। তবে বিষয়টি কিছুটা কঠিনই ছিল গবেষকদের জন্য। কারণ চা পানকারীর সামাজিক পারিপার্শ্বিকতাও এক্ষেত্রে একটি ভূমিকা রাখে।
ফেং কিউশি এবং শেন কে নামে দুই বিশেষজ্ঞ এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। এজন্য ২০০৫-১৪ সাল পর্যন্ত চাইনিজ লংগিচুডিনাল হেলদি লনজিভিটি সার্ভেতে (সিএলএইচএলএস) সংগৃহীত ১৩ হাজার ব্যক্তির তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, সামাজিক পারিপার্শ্বিকতার প্রভাব ছাড়াই নিয়মিত চা পান বিষণ্নতার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। সামাজিক পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো অনুকূলে থাকলে এ ঝুঁকি হ্রাস পায় আরো দ্রুতগতিতে। এছাড়া নিয়মিত চা পানকারীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা বেশি হওয়ার পাশাপাশি সামাজিকভাবে সক্রিয় হওয়ার প্রবণতাও থাকে অনেক বেশি।
