মেক্সিকোয় প্রবেশের সময় মধ্য আমেরিকার কয়েকশ অভিবাসীকে আটকে দিয়েছে দেশটির জাতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সুচিয়্যাত নদী পার হয়ে মেক্সিকোর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে ইচ্ছুক অভিবাসীরা সীমান্তে এ বাধার মুখে পড়েন। ওয়াশিংটনের চাপ থাকায় তাদের আটকে দেয় মেক্সিকোর সীমান্তরক্ষী বাহিনী। খবর বিবিসি ও এপি।
মেক্সিকোয় প্রবেশের জন্য একটি সেতু ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ব্যর্থ হয়ে মেক্সিকো ও গুয়াতেমালা সীমান্তের মধ্যবর্তী নদীটি হেঁটে পার হন এসব অভিবাসী। ‘২০২০ ক্যারাভ্যান’খ্যাত দুই থেকে সাড়ে তিন হাজারের একটি অভিবাসী দলের অংশ তারা। এদের অধিকাংশ হন্ডুরাসের নাগরিক বলে জানা গেছে।
মেক্সিকোয় প্রবেশের চেষ্টাকালে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে অভিবাসীদের সংঘর্ষও হয়। এ সময় নিরাপত্তা সদস্যরা তাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। জবাবে তারাও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে।
এদিকে হট্টগোলের মধ্যে সুযোগ পেয়ে কেউ কেউ মেক্সিকো প্রবেশে সক্ষম হয়েছেন। এদের মধ্যে কিছু অভিবাসীকে আটক করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। আটককৃতদের অভিবাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আইনি বৈধতা না পাওয়া গেলে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মেক্সিকো সরকার।
মেক্সিকো প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে অভিবাসীরা গুয়াতেমালার সীমান্তবর্তী তেকুন উমান শহরে তাঁবু ফেলেছেন। এটি মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী শহর সিউদ্যাদ হিদ্যালগোর অদূরে অবস্থিত।
এদিকে আটকে পড়া অভিবাসীদের আট প্রতিনিধিকে মেক্সিকো প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদোর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। মেক্সিকোর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অনুমতি দিতে ও শরণার্থী আইনের প্রতি সম্মান দেখাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
গত বুধবার থেকে গুয়াতেমালার মধ্য দিয়ে কয়েক হাজার অভিবাসী পাড়ি দিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এদিকে সহিসংতা, দারিদ্র্য ও ব্যাপক খুনোখুনির ঘটনার কারণে নিজেরা স্বদেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মেক্সিকো সীমান্তে আটকা পড়া অনেক অভিবাসী। এলভিস মার্টিনেজ নামের এক অভিবাসী বলেন, গরম সহ্য করতে না পেরে আমরা বেপরোয়া ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। বিশেষত শিশুদের পক্ষে এ খরতাপ সহ্য করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে অভিবাসীরা মেক্সিকোয় অবস্থান ও কাজ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তারা দেশটিতে শরণার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন বলেও জানানো হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে অভিবাসীরা দেশটি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে একই সূত্র। তবে এ বিষয়ে মেক্সিকো কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে চালাকি করছে বলে অভিযোগ করেছেন এক অভিবাসী। তিনি বলেন, মেক্সিকো কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে প্রতারণার চেষ্টা করছে।