মুশফিকের শূন্যতা পূরণের চ্যালেঞ্জ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিষেধাজ্ঞার কারণে নেই সাকিব আল হাসান, তার না থাকা ঠিক হয়েছে আরো আগেই। সাকিবকে ছাড়াই বাংলাদেশ দল ভারত সফর করে এসেছে। তবে পাকিস্তান সফরে এসে নতুন এক সমস্যা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকেও এবার পাচ্ছে না বাংলাদেশ। নিরাপত্তা ইস্যুতে নিজেকে পাকিস্তান সফর থেকে সরিয়ে নিয়েছেন মুশফিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এমন স্নায়ুক্ষয়ী এক সফরে মুশফিকের শূন্যতা বাংলাদেশ পূরণ করতে পারবে কিনা?

সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন মুশফিক। সবে শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন বাংলাদেশের এই ব্যাটিং স্তম্ভ। আসরে দ্বিতীয় এবং দেশীয়দের মাঝে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যান মুশফিক। বিপিএলে ১৪ ম্যাচে তিনি করেন ৪৯১ রান। রান করেছেন ১৪৭ স্ট্রাইক রেটে। এমন দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ব্যাটসম্যানকে হারানো যেকোনো দলের জন্যই ক্ষতি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যন্সের দিকে তাকালে মুশফিককে না পাওয়ার ক্ষতি পূরণ প্রায় অসম্ভব।

কিছুদিন আগের ভারতের সফরের দিকে চোখ রাখলেই আমরা বুঝতে পারব মুশফিক বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কতটা অপরিহার্য। দিল্লিতে প্রতিকূল পরিবেশে বাংলাদেশকে জয় এনে দেয়ার নায়ক ছিলেন তিনি। ৪৩ বলে ৬০ রান করে হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। পরের দুই ম্যাচে মুশফিকের ব্যাটও জ্বলে ওঠেনি, বাংলাদেশও আর জয়ের দেখা পায়নি। এমনকি বিধ্বস্ত হওয়া টেস্ট সিরিজেও বাংলাদেশের পক্ষে সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন মুশফিক। এর আগে বিশ্বকাপেও সাকিবের পর বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন মুশফিক। পাকিস্তান সফরের অনুশীলন ক্যাম্পে এসেও তাই মুশফিককে মিস করার কথা বলেছেন বিসিবির প্রধান নাজমুল হাসান পাপন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

শনিবার মিরপুরে মুশফিকের শূন্যতা নিয়ে বোর্ড সভাপতি বলেন, ‘আমরা মুশফিককে অনেক অনুভব করব। সে আমাদের দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান, সবসময়ই ছিল, তবে এবার বিপিএল টি২০-তে সে আবার প্রমাণ করেছে যে সে হচ্ছে সেরা। তাই সেদিক থেকে যদি চিন্তা করেন, তাহলে আমরা ওকে অবশ্যই মিস করব। আরেকটি কথা হচ্ছে সাকিব নেই। সাকিব-মুশফিক দুজনই নেই। যারা ফর্মে আছে, তারা যদি না থাকে সেটা তো আমাদের জন্য একটা দুর্ভাগ্য।

একই প্রতিধ্বনি শোনা গেছে পরে কোচ ডমিঙ্গোর কণ্ঠেও, ‘তাকে অনেক মিস করব। সে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বাংলাদেশের অসাধারণ এক খেলোয়াড়। তার অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমরা মিস করব। বিপিএলে সে দারুণ সময় কাটিয়েছে এবং ভারতেও সে আমাদের জন্য ভালো করেছে।

নতুন কাউকে মুশফিকের শূন্যতা পূরণের সুযোগও নিতে বলেছিলেন তিনি, ‘এটা (মুশফিকের না থাকা) অবশ্য অন্য একজনকে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ দিচ্ছে। একদিন মুশফিক খেলা থামিয়ে দেবে। তখন আমাদের একজনকে প্রয়োজন, যে কিনা এগিয়ে এসে মুশফিকের মতো পারফর্ম করবে।

আসল প্রশ্নটা অবশ্য এখানেই, আসলেই কি মুশফিকের শূন্যতা পূরণ সম্ভব? গতকাল তরুণ ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তও বলেছেন, মুশফিকের শূন্যতা পূরণের চিন্তা করছেন না তারা। তবে মুশফিকের বিকল্প না হলেও নিজেদের সেরাটা দিয়ে অভাব কিছুটা ভুলিয়ে দিতে পারেন শান্তরা। বিপিএলে বাংলাদেশী তরুণদের পারফরম্যান্সও ছিল আশাজাগানিয়া। নাঈম, আফিফ, শান্ত রান পেয়েছেন। অধারাবাহিক ট্যাগ লেগে যাওয়া লিটন, সৌম্যও ভালো পারফর্ম করেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাঠে পারফরম্যান্স ধরে রাখাটাই মূল ব্যাপার। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে না হলেও, ঐক্যবদ্ধ পারফরম্যান্সে মুশফিকের অভাব দূর করার চেষ্টা করতে হবে। অবশ্য বাস্তবতা বলছে, দিন শেষে উইকেটরক্ষক মুশফিকের অভাব পূরণ সম্ভব হলেও, ব্যাটসম্যান মুশফিককে ভুলে থাকা কঠিন এক চ্যালেঞ্জ হবে বাংলাদেশের জন্য।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন