ঘনায়মান জলবায়ু সংকটে ঝুঁকিতে অর্ধেকের বেশি বৈশ্বিক জিডিপি

বণিক বার্তা ডেস্ক

কেবল প্রাকৃতিক ক্ষতির কারণে ঝুঁকির মুখে রয়েছে অর্ধেকের বেশি বৈশ্বিক জিডিপি। সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক নতুন প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিএনবিসি।

১২ মাসের একটি পর্যায়কাল পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে, যা পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর জন্য সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। বছরটি বৈশ্বিক গড় উষ্ণতার দিক থেকে ছিল দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর। এছাড়া এই ১২ মাসেই যুক্তরাষ্ট্র, অ্যামাজন থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত ভয়াবহ দাবানল সংঘটিত হতে দেখা গেছে।

বহুজাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউজকুপার্সের সঙ্গে সমন্বিতভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ডব্লিউইএফ। প্রতিবেদন অনুসারে, সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক মোট মূল্য উৎপাদনের ৪৪ ট্রিলিয়ন ডলার, (যা বিশ্বের অর্ধেকের বেশি জিডিপির সমান) মাঝারি বা উচ্চমাত্রায় প্রকৃতি এর পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। যে কারণে প্রাকৃতিক ক্ষতির কারণে পরিমাণ জিডিপির ঝুঁকিও অনেক বেশি।

আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ডব্লিউইএফের সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সম্মেলনে যোগ দিতে এরই মধ্যে সারা বিশ্বের নীতিনির্ধারক ব্যবসায়িক নেতারা গতকাল সুইজারল্যান্ডের দাভোসে এসে পৌঁছেছেন।

নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সম্মেলনে এবার মূল মনোযোগের কেন্দ্রে থাকছে তীব্র জলবায়ু সংকট।

ডব্লিউইএফের প্রতিবেদন অনুসারে নির্মাণ ( ট্রিলিয়ন ডলার), কৃষি ( দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার) এবং খাদ্য পানীয় ( দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার) তিন বৃহত্তম শিল্প প্রকৃতির ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। সমন্বিতভাবে তিনটি শিল্পের মোট উৎপাদিত মূল্য জার্মানির অর্থনীতির প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তিনটি শিল্প বন সমুদ্র থেকে সরাসরি সম্পদ আহরণ বা স্বাস্থ্যকর মাটি, পরিষ্কার পানি, পরাগায়ণ স্থিতিশীল জলবায়ুর মতো বাস্তুতন্ত্রের পরিষেবাগুলো গ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। যার অর্থ হলো, প্রকৃতি যদি এসব সেবা সরবরাহ করার সক্ষমতা হারায়, তবে শিল্পগুলো ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

দেখা গেছে, প্রকৃতির ওপরউচ্চমাত্রায় নির্ভরশীলশিল্পগুলো বৈশ্বিক জিডিপির ১৫ শতাংশ (১৩ ট্রিলিয়ন ডলার) উৎপাদন করে। এর বাইরেমাঝারি মাত্রায় নির্ভরশীলশিল্পগুলোর বৈশ্বিক জিডিপির ৩৭ শতাংশ বা ৩১ ট্রিলিয়ন ডলার উৎপাদন করছে।

প্রতিবেদনে ডব্লিউইএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডমিনিক ওউরে বলেন, আমাদেরকে মানুষ প্রকৃতির মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কারণে প্রকৃতির ক্ষতিকে কেবলবাহ্যিক আচরণহিসেবে আর বিবেচনা করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রতিবেদন আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে কীভাবে প্রকৃতির ক্ষতির মুখে থাকা সব ব্যবসায়িক খাত এবং আমাদের সম্মিলিত ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সুরক্ষার জন্য একটি জরুরি বহুমুখী ঝুঁকি হয়ে উঠছে।

ডব্লিউইএফ জানিয়েছে, আমাদের উদ্দেশ্য বর্তমান পরিস্থিতিতে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা।

জলবায়ু পরিবর্তনকেআমাদের সময়কালের নির্ধারণী ইস্যুহিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে জাতিসংঘ। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জলবায়ু সংকটকে টেকসই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন