দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় রাজধানীর তাপমাত্রা অত্যধিক বেশি হওয়ায় মানুষের কর্মক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নানা রোগের প্রকোপ। ‘মিটিগেশন স্ট্র্যাটেজিক ফর আরবান মাইক্রো ক্লাইমেট অব ঢাকা মেগাসিটি টু রিডিউস অ্যাডভার্স ক্লাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট’
শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
গতকাল বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)
অডিটোরিয়ামে ‘ঢাকা মেগাসিটির উষ্ণায়ন প্রশমন কৌশল: টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োগ’
শীর্ষক এক সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান ও বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির। সেমিনারের আয়োজন করে যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ ও বিআইআইএসএস।
গবেষণায় ব্যবহার হয়েছে স্যাটেলাইট থেকে নেয়া প্রায় ১৭ হাজার ছবি। এতে দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে সবসময় রাজধানীর তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বেশি থাকে এবং এই মাত্রা দিনের চেয়ে রাতে বেশি বেড়ে যায়।
ঢাকার পরিকল্পিত এলাকা যেমন গুলশান ও উত্তরায় অপরিকল্পিত এলাকার চেয়ে উষ্ণতা তুলনামূলক বেশি। এর কারণ হিসেবে পরিকল্পিত এলাকাগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি। ঢাকা শহরের ভবন, জনসংখ্যা পরিবহন ঘনত্ব অনেক বেশি। পাশাপাশি বনায়নের অপ্রতুলতা মাত্রাতিরিক্ত তাপের অন্যতম কারণ মনে করছেন গবেষকরা।
উষ্ণতা বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে গণস্বাস্থ্যেও। যার প্রভাবে প্রাণঘাতী রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত অপুষ্টি, ডায়রিয়া, ডেঙ্গুসহ নানা ধরনের রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এখনই আমাদের কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকরণ, ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড যথাযথভাবে অনুসরণ ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ জলাশয় নিশ্চিত করতে হবে বলে মত প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারের প্রথম সেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম। সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রদূত এম ফজলুল করিম, কার্টেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইকোনমিকসের ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রোপার্টির অধ্যাপক ড. রুহুল সলিম। এছাড়া ড. সলিমুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারের অন্য সেশনের মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশলীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
