টাইগারদের নিরাপত্তায় যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে পাকিস্তান

বণিক বার্তা অনলাইন

এক দশক আগে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিল পাকিস্তানীরা। গেল বছর আবার শ্রীলঙ্কান দলকেই আমন্ত্রণ জানিয়ে সেই বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর চেষ্টা চালিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পিসিবি। নানান জল্পনা কল্পনার পর পাকিস্তানে তিন ধাপে তিন ফর্মেটের ক্রিকেট খেলতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও। তবে ক্রিকেটারদের পাকিস্তানে খেলতে যেতে বাধ্য না করার কথাও জানিয়েছে বিসিবি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ‘না’ বলে দিয়েছেন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি এবং ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকও। তবে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়েই ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা দেয়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সফর উপলক্ষে এক বৈঠকে বসেছিল আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি। প্রথমদফায় সফরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে পাঞ্জাব রাজ্যের লাহোর ও রাওলাপিন্ডিতে। রাজ্যের আইনমন্ত্রী রাজা বাশারতের নেতৃত্বে ওই বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পাঞ্জাব পুলিশের মহাপরিদর্শক শোয়েব দস্তগীর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব মোমিন আঘা এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা।

খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা তাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা ‘ভিডিও প্রেজেন্টেশনের’ মাধ্যমে তুলে ধরে ধরেছেন। বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা বৈঠকে জানিয়েছেন, অতিথি ক্রিকেটারদের থাকা এবং স্টোডিয়ামে যাওয়ার রাস্তায় কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তায় শুধু লাহোরেই ১০ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন, একই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন কুইক রিসপন্স ফোর্সের ১৯ কর্মকর্তা, থাকবে আর্মি কমান্ডো এবং অশ্বারোহী সৈন্যদলও। অন্যদিকে রাওলাপিন্ডিতে আর্মি ব্যাটালিয়ন এবং অশ্বারোহী সৈন্যদলের উইংসহ চার হাজারেরও বেশি পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

স্টেডিয়ামের আশপাশের সড়কেও নেয়া হচ্ছে বাড়তি নিরাপত্তা। বিভিন্ন জায়গায় চেক পয়েন্টের পাশাপাশি নজরদারি থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমেও। মন্ত্রী রাজা বাশারত অতিথি ক্রিকেট দলের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও কমাতে যানজট সমস্যার দিকে নজরদারির নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যয়ও আগের তুলনায় কমানোর কথাও বলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সরদার উসমান বুজদার বলেছেন, ক্রিকেট ম্যাচের জন্য মানুষকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়া উচিৎ। 

রাওলাপিন্ডি পুলিশের নেয়া এই নিরাপত্তা পরিকল্পনায় কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা ইসলামাবাদ পুলিশের সহায়তা নিয়ে সমাধান করারও নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

প্রথম দফায় এ মাসের শেষ সপ্তাহে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। আগামী ২৪, ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় দফায় সফরে ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে রাওয়ালপিন্ডিতে। এরপর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় দফায় প্রথমে একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচ (৩ এপ্রিল) এবং ৫-৯ এপ্রিল শেষ টেস্টটি খেলবে বাংলাদেশ।

আরো পড়ুন:

তিন মাসে তিন দফায় পাকিস্তান সফর

নতুন মুখ হাসান মাহমুদ

পাকিস্তান যাচ্ছেন না ম্যাকেঞ্জিও

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন