দুদিনের বড় পতনের প্রভাব সূচকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে তিন কার্যদিবসে। আর কমেছে দুই কার্যদিবসে। তবে তিনদিনের উত্থান দুদিনের পতনকে অতিক্রম করতে পারেনি। ফলে সার্বিকভাবে পয়েন্ট হারানোর মধ্য দিয়েই সপ্তাহ পার করেছে ডিএসইএক্স। পয়েন্ট কমেছে দেশের আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্সেও। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে।

আগের সপ্তাহের টানা পতন থেকে ফিরে গত সপ্তাহের প্রথম দিন চাঙ্গা ভাবেই শুরু করেছিল দেশের শেয়ারবাজার। এদিন ডিএসইএক্সে যোগ হয় ১৫ পয়েন্ট। ৪ হাজার ১৯৭ পয়েন্ট নিয়ে রোববার লেনদেন শুরু করা সূচকটি দিন শেষে ছিল ৪ হাজার ২১২ পয়েন্টে। পরের দুই কার্যদিবস সোমবার ও মঙ্গলবার যথাক্রমে ৮৯ ও ৮৭ পয়েন্ট হারায় সূচকটি। দুদিনেই ডিএসইএক্স কমেছে ২ শতাংশের বেশি হারে। তবে সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে এ ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে শেয়ারবাজার। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৪ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইএক্স কমেছে ৪৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

ডিএসইএক্স কমলেও গত সপ্তাহে প্রায় অপরিবর্তিত ছিল ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০। দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৪০৬ দশমিক ৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪০৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট। অন্যদিকে পাঁচ কার্যদিবসে ৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ কমেছে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৯৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৯৪৫ পয়েন্ট।

চলতি বছরের প্রথম দিনে ডিএসইতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা হয়েছে নতুন সূচক সিডিএসইটির। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ৮৪৫ পয়েন্টে, আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৮৪৪ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ কমেছে। আলোচ্য সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ২৬৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মোট লেনদেন ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ কমেছে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে বেশির ভাগ শেয়ারের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে মাত্র ৬০টির, কমেছে ২৭৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২১টির।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গেল সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ খাত। ১০ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংক ও বস্ত্র খাত। এছাড়া ৮ শতাংশ দখলে নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ও সাধারণ বীমা খাত যৌথভাবে চতুর্থ, ৭ শতাংশ দখলে নিয়ে সিমেন্ট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত যৌথভাবে পঞ্চম অবস্থানে ছিল।

আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। এর পরের অবস্থানে ছিল এডিএন টেলিকম লিমিটেড। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষে ছিল যথাক্রমে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড, রিং শাইন টেক্সটাইলস লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড।

সমাপনী দরের ভিত্তিতে ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল যথাক্রমে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ফিনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, রেনাটা লিমিটেড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, মতিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স ১ দশমিক ২৯ শতাংশ বা ১০১ পয়েন্ট কমে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৭ হাজার ৬৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৭ হাজার ৭৩৫ পয়েন্ট। তবে নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক সিএসই৩০ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ১০৭ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৮৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১০ হাজার ৭৫৯ পয়েন্ট।

সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ৫৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৯৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৪৭টির, কমেছে ২৩১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০টির বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন