বহুল আলোচিত পাকিস্তান সফরের প্রথম
ধাপে টি২০ সিরিজ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। সেই তিনটি টি২০ ম্যাচের দল ঘোষণা করল
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এ দলে চমক
নতুন মুখ পেস বোলার হাসান মাহমুদ। আগামী ২৪,
২৫ ও ২৭ জানুয়ারি লাহোরে এ তিনটি ম্যাচ খেলবে
বাংলাদেশ। এ সফরের জন্য মিরপুরে আজ শুরু হবে তিনদিনের অনুশীলন ক্যাম্প।
পাকিস্তান সফরের দল থেকে আগেই নাম
সরিয়ে নিয়েছিলেন অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। তাই ১৫ সদস্যের এ
দলে স্বাভাবিকভাবেই রাখা হয়নি বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহককে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এ সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
পাকিস্তানে কারা যাবেন, কারা
যাবেন না—এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই নানা গুঞ্জন চলছিল ক্রিকেটপাড়ায়। তবে টি২০
ফরম্যাটে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আপত্তির কথা খুব বেশি সামনে আসেনি। তাই
সবার চোখ ছিল টি২০ স্কোয়াডের দিকে। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ ঠিকই যাচ্ছেন।
অন্যদিকে মুশফিকের না যাওয়ার বিষয়টি আগেই নিশ্চিত করেছে বিসিবি। সেজন্য বোর্ডকে
চিঠিও দিয়েছেন তিনি। পরে বিপিএল ফাইনাল শেষে স্পষ্টভাবে মুশফিক বলেন, ‘আগেই
বলে দিয়েছি, আমি যাব না। এটা আমার পারিবারিক কারণ। আগেই অনুরোধ করেছিলাম, বোর্ডও
মেনে নিয়েছে। অফিশিয়াল চিঠিও দিয়েছি।’
এ সময় তিনি পাকিস্তান সফরের ব্যাপারে
পরিবারের শঙ্কায় থাকার কথাও জানান সাংবাদিকদের। পাশাপাশি এ-ও বলেন, পাকিস্তানে
সফরের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস না আসা পর্যন্ত যাচ্ছেন না তিনি।
মুশফিক না গেলেও দলের অন্য অভিজ্ঞরা
ঠিকই ঠাঁই পেয়েছেন দলে। তবে ভারত সফরের দলে থাকা ক্রিকেটারদের মাঝে বাদ পড়েছেন আবু
হায়দার রনি, তাইজুল ইসলাম, আরাফাত সানি ও মোসাদ্দেক হোসেন। এদের বাদ পড়ার বিপরীতে দলে ডাক পেয়েছেন
তামিম ইকবাল, রুবেল হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান। এ চারজনই অবশ্য সদ্য শেষ হওয়া
বিপিএলে আলো ছড়িয়েছেন। যদিও তামিম এখনো জাতীয় দলে নিশ্চিত মুখ। ব্যক্তিগত কারণেই
ভারত সফরে ছিলেন না তিনি। অন্যদিকে রুবেল বিপিএলে ২০ উইকেট শিকার করে দলে জায়গা
ফিরে পান। বিপিএলে দেশী ক্রিকেটারদের মাঝে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান শান্ত রান করেছেন
৩০৮। প্রথম দিকে কিছুটা অনুজ্জ্বল থাকলেও টুর্নামেন্ট গড়ানোর সঙ্গে ফিরে পান ছন্দ।
এছাড়া অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আলোচনায় ছিলেন মেহেদী হাসানও। ব্যাট হাতে ২৫৩ রান করার
পাশাপাশি উইকেটও নিয়েছেন ১২টি।
স্কোয়াডে হাসান মাহমুদের অন্তর্ভুক্তি
বেশ চমক জাগানো। বিপিএলের মঞ্চে বল হাতে গতির ঝড় দেখাতে পারলেও উইকেট নেয়ার
ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়েই ছিলেন তিনি। ১৩ ম্যাচে শিকার ১০ উইকেট। তবে গতি ও
বৈচিত্র্যের কারণে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচে বল করেছে ঘণ্টায় ১৪০
কিলোমিটার গতির উপরে, যা নিশ্চিতভাবেই নির্বাচকদের নজর কেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই গতিসম্পন্ন
একজন তারকার খোঁজে ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। বলা যায়, সে কারণেই কপাল খুলেছে লক্ষ্মীপুরের
২০ বছর বয়সী এ পেসারের।
অন্যদিকে বিপিএলে ভালো করেও চোটের
কারণে সুযোগ পাননি ইমরুল কায়েস। আসরে ৪৪২ রান করেও হতাশ থাকতে হচ্ছে তাকে। উল্টো
দিকে, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বিপিএলে ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। তবু দলে জায়গা ধরে
রেখেছেন তিনি। বিপিএলে ভালো না করলেও জাতীয় দলের হয়ে আগের ম্যাচগুলোতে উজ্জ্বল
ছিলেন এ লেগ স্পিনার। তাই এত দ্রুত তার ওপর আস্থা হারাতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।
বাংলাদেশ টি২০ দল
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম
ইকবাল, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত,
লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ
হোসেন ধ্রুব, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব,
মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল
ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, হাসান মাহমুদ