বর্তমান ফ্রেঞ্চ ওপেন চ্যাম্পিয়ন ও
মেয়েদের টেনিসে এক নম্বর র্যাংকধারী অ্যাশলেই বার্টি নয় বছর অস্ট্রেলিয়ার কোনো
খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখালেন। গতকাল ইউক্রেনের
ডায়ানা ইয়াস্ত্রেমস্কাকে ৬-২,
৭-৫ গেমে হারিয়ে অ্যাডিলেড ইন্টারন্যাশনালের
শিরোপা জয় করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে কাল ভোরে শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের
প্রস্তুতিও দারুণভাবে সেরে নিলেন হোম ফেভারিট বার্টি।
বার্টির আগে ঘরের কোর্টে সর্বশেষ
অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে ২০১১ সালে হোবার্টে শিরোপা জিতেছিলেন স্লোভাকিয়ান-অস্ট্রেলিয়ান
খেলোয়াড় জারমিলা উলভে। ২৪ র্যাংকধারী ইয়াস্ত্রেমস্কাকে ৮২ মিনিটে হারান বার্টি। এ
জয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়েই সোমবার শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া ওপেন মিশনে নামতে পারবেন
তিনি। জয় শেষে বার্টি বলেন,
‘এ সপ্তাহের সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো, আমি
লড়াই করছি এবং প্রতি মুহূর্তে,
প্রতি ম্যাচে ধীরে ধীরে ভালো করে নিজের অবস্থানে
ফিরছি। আমি এখন এমন অবস্থানে রয়েছি যেখান থেকে আরেকটি শিরোপার জন্য লড়াই করা যায়, যা
সত্যিই রোমাঞ্চকর। নিজ দেশে খেলার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়... মেলবোর্নের
কোর্টে নামার তর সইছে না আমার।’
সোমবার রাতের সেশনে (বাংলাদেশ
সময় বেলা ২টা) রড লেভার অ্যারেনায় প্রথম রাউন্ডে লেসিয়া সুরেঙ্কোর মুখোমুখি হবেন
বার্টি। র্যাংকিংয়ের এক নম্বরে ওঠার পর এ প্রথম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলবেন বলে তার
কাঁধে থাকবে প্রত্যাশার বড় চাপও। এবারের আসর নিয়ে তার অনুভূতি, ‘আমার
জন্য এটা হতে যাচ্ছে খুবই রোমাঞ্চকর ও নতুন এক টুর্নামেন্ট। বলা যায়, সাদা
স্লেট নিয়েই আমি শুরু করছি,
আপাতত ভাবনায় প্রথম রাউন্ড।’
অবশ্য বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় শুরু
হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে প্রথম দিনের জমজমাট লড়াই। সকালে কোর্টে থাকবেন নারী
এককে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নাওমি ওসাকা,
২৩ বারের গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন সেরেনা
উইলিয়ামস, দুবারের সাবেক উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন পেত্রা কেভিতোভা, সাবেক
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন ক্যারোলিন ওজনিয়াকি; পুরুষ এককে দ্বিতীয় বাছাই নোভাক
জোকোভিচ, তৃতীয় বাছাই রজার ফেদেরার।
২০ বারের গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন
ফেদেরার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই জিতেছেন ছয়বার। অথচ এবারের আসরে নাকি সুইস গ্রেটের
প্রত্যাশা ‘খুব কম’। অন্য ফেভারিট জোকোভিচ,
রাফায়েল নাদালরা ব্রিসবেন, পার্থ
ও সিডনিতে এটিপি কাপের ম্যাচ খেলে নিজেদের তৈরি করেছেন। এ সময় ৩৮ বছর বয়সী ফেদেরার
পরিবারকে সময় দিয়েছেন। নতুন বছরে তিনি কোনো টুর্নামেন্ট না খেলেই অস্ট্রেলিয়ান
ওপেনে নামছেন। এ কারণেই খুব বেশি প্রত্যাশা নেই তার। যুক্তরাষ্ট্রের স্টিভ জনসনের
বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম মিশন শুরু করতে চলা ফেদেরার বলেন, ‘দেখুন, এটা
খুবই কঠিন হতে পারে। কেননা যার বিপক্ষে নামছি সে এ সপ্তাহে অনেক খেলেছে এবং এখন
পুরো তৈরি। খেলোয়াড়টি ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি, কিন্তু আমি নই। তার পরও আশা করছি, তার
সঙ্গে ভালো একটি ম্যাচ হবে।’
বয়স হয়ে গেলেও গত বছর চারটি শিরোপা জয়
করেন ফেদেরার, যদিও এ সময় নামের পাশে আরেকটি গ্র্যান্ড স্লাম যোগ করতে পারেননি তিনি।
উইম্বলডনে কাছাকাছি গিয়েও পাঁচ সেটের মহাকাব্যিক ফাইনালে হেরেছেন জোকোভিচের কাছে।
সর্বশেষ তিনি গ্র্যান্ড স্লামের হাসি হেসেছেন ২০১৮ সালে এ মেলবোর্ন পার্কে।
গত বছর দুটি করে গ্র্যান্ড স্লাম
জিতেছেন ফেদেরারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জোকোভিচ ও নাদাল। ১৯টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে
ফেদেরারের কাছাকাছি চলে এসেছেন নাদাল। এবার ফেদেরার এ দুজনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে
পারবেন কি? অবশ্য স্তেফানোস সিসিপাস,
দানিল মেদভেদেভের মতো উঠতি তরুণ জোকোভিচ, নাদালদের
আধিপত্যে চোখ রাঙাচ্ছেন।
মেলবোর্ন পার্কে কাল শুরু হবে
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ১০৮তম আসর,
উন্মুক্ত যুগে যা ৫২তম। এএফপি