দৌলতদিয়া ঘাট

ফেরির টিকিট বুকিং নিয়ে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারে ফেরির টিকিট বুকিংকে কেন্দ্র (কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকিট কিনে বিক্রি) করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতের এ ঘটনায় উভয় পক্ষের দুজন আহত হয়েছেন। এছাড়া স্থানীয় একটি হোটেলে ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২২ বছর ধরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে পারাপারকারী বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাকের ফেরির টিকিট বুকিং নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডলের লোকজন। ট্রাক চালকদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, কাউন্টার থেকে নির্ধারিত মূল্যে আগাম টিকিট কেটে পরে বেশি দামে বিক্রি করতেন তারা। এতে পণ্যবাহী ট্রাকচালকদের ঘাটে এসে টিকিটের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যার পর পণ্যবাহী ট্রাকের ফেরির টিকিট বুকিং করতে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডলসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আসামি করে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে উভয় পক্ষ।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে এক পক্ষের মামলা করেন। অন্য মামলাটি করেন সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডলের ভাগিনা রবিউল মোল্লা।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ জানান, ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ বারোবাজার আড়তদার ও ফড়িয়া মত্স্য সমিতি তাদের পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর ফেরি পারাপার তদারকিসহ টিকিট বুকিং দিতে তাদের কয়েকজনকে লিখিতভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তাদের লোক দৌলতদিয়ায় ট্রাক বুকিং দিতে গেলে মেহেদী হাসান রুবেলের নেতৃত্বে এক দল দুর্বৃত্ত তাকে মারধর করে আহত করে। পরে সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ২২ বছর ধরে বারোবাজার আড়তদার সমিতির ট্রাক আমার তত্ত্বাবধানে পারাপার হয়। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন আমার লোক হিসেবে ওই ট্রাক পারাপার করে থাকে। ওই ট্রাক পারাপারের নিয়ন্ত্রণ নিতে আমার প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ট্রাক পারাপারের নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মূলত একটি গ্রুপ ট্রাক পারাপারে চাঁদাবাজি করে আসছে, আর অন্য একটি গ্রুপ তাদের হটিয়ে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে। পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন