সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের
অনুগত সেনা ও রুশ মিত্রদের হামলায় আলেপ্পো প্রদেশের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে
প্রায় ১৩ হাজার বেসামরিক বাসিন্দা পালিয়েছে। খবর আনাদোলু ও আল জাজিরা।
সিরিয়ার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন
গ্রুপ জানায়, দুই দিনব্যাপী চলা হামলায় ১২ হাজার ৮৮৪ বেসামরিক সিরীয় তাদের বাড়িঘর
ছেড়ে তুরস্ক সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়ার বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে খান আল-আসাল, কাফর
নাহা ও আইন জারা অঞ্চলের বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়েছে।
আহমদ আলী নামে এক বেসামরিক সিরীয়
তুরস্কের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানান, আলেপ্পোর
পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রাম খান আল-আসালে আমি বসবাস করে এসেছি। ওখানে হামলা হওয়ায় আমরা পালিয়েছি। এখন জানি
না কোথায় যাব। হয়তো ইদলিবের দানা অঞ্চলে যেতে হবে।
আবদুল-রাজ্জাক রাহাল বলেন, তীব্র
হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারের ১৯ সদস্য নিয়ে গ্রাম ছেড়ে খান আল-আসালে আশ্রয়
নিয়েছি, কারণ তা কিছুটা নিরাপদ। কিন্তু এখন তারা খান আল-আসালেও হামলা
চালাচ্ছে। আমাদের এখন এ এলাকাও ছাড়তে হচ্ছে। জানি না, কোথায়
যাব।
বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে
ইদলিবের অস্থায়ী তাঁবুগুলোয় পর্যাপ্ত মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাচ্ছে না। আরো অধিক
তাঁবু টানানোর মতো পর্যাপ্ত জায়গাও নেই সেখানে। হাজারো সিরীয় পরিবারের জরুরি
মানবিক সাহায্য প্রয়োজন।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ইদলিবকে
সংঘাতমুক্ত অঞ্চল (ডি-এসকেলেশন জোন) হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল তুরস্ক ও রাশিয়া। ঐকমত্যের
অংশ হিসেবে সেখানে সর্বপ্রকার আগ্রাসন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু তখন থেকে
বাশার অনুগত সেনা ও রুশ বাহিনীর হামলায় ১ হাজার ৩০০-এরও বেশি বেসামরিক সিরীয় নিহত
হয়েছে। গত বছরে তীব্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ লাখেরও বেশি সিরীয় তুরস্ক সীমান্তে
অবস্থান নিয়েছে।
২০১১ সালে তুরস্কে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ
শুরুর পর থেকে ৩৭ লাখ সিরীয়কে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ শরণার্থী আশ্রয়কারী দেশ
হয়েছে তুরস্ক।
এদিকে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা
হচ্ছে, অবিলম্বে ইদলিবে সব ধরনের সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের
মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল বাখলেট। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি বেসামরিক নাগরিকদের
সুরক্ষা দিতে ফের ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শুক্রবার এক সংবাদ বিবৃতিতে তিনি বলেন, এটি
খুবই পীড়াদায়ক যে স্থল ও আকাশপথে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রতিদিনই বেসামরিক মানুষ
নিহত হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ প্রকাশিত এক
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বিরোধী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবে রুশ সমর্থিত সিরীয়
সেনাদের হামলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ সিরীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তারা তুরস্ক
সীমান্তের কাছে অবস্থান করছে।
বিরোধীদের নির্মূলে শহর ও গ্রামগুলোয়
হামলা চালাচ্ছে রুশ বিমান ও সিরীয় আর্টিলারি বাহিনী। তাদের সহযোগিতা করছে
ইরানপন্থী মিলিশিয়ারা।