ক্যান্সার চিকিৎসায় সহায়ক হতে পারে করলা

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্বাদে তিক্ত করলা। তবু সবজি হিসেবে সুপ্রাচীনকাল থেকেই বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে উপমহাদেশীয় অঞ্চলের দেশগুলোয়। খাওয়ায় রুচি ফেরানোয় জুড়ি নেই সবজিটির। এছাড়া প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও ঔষধি হিসেবে ব্যবহার হয়েছে করলার। ইদানীংকালেও ডায়াবেটিসের বিকল্প চিকিৎসা হিসেবে সবজিটির রস ও সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার বাড়ছে। পুষ্টি ও ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি হিসেবে করলার অনন্যতা প্রমাণ হয়েছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। গবেষণাগারে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে সবজিটি। খবর মেডিকেল নিউজ টুডে।

উদ্ভিদ হিসেবে করলা ও শসা একই গোত্রভুক্ত। ধরা হয় দক্ষিণ ভারতের কেরালায় এর উত্পত্তি। পরবর্তী সময়ে তা সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। চতুর্দশ শতকে প্রথম করলা আমদানি করে চীনারা। পরবর্তী সময়ে আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে করলার সুনাম।

ডায়াবেটিসের বিকল্প চিকিৎসায় করলা বেশ কার্যকরভাবেই ব্যবহার হয়ে এসেছে এতদিন। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিভিত্তিক সেন্ট লুই ইউনিভার্সিটির প্রফেসর রত্না রায় ও তার সহকর্মীরা সম্প্রতি ক্যান্সারের চিকিৎসায় করলার ব্যবহার উপযোগিতা নিয়ে গবেষণা চালান।

গবেষণাগারে করলার রস নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে তারা দেখতে পান, এটি ক্যান্সার কোষ জন্মানো ও প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। গবেষণায় পাওয়া ফলাফল নিবন্ধ আকারে প্রকাশ হয়েছে সেল কমিউনিকেশন অ্যান্ড সিগন্যালিং জার্নালে।

ভারতে বড় হওয়ার কারণে করলার রুচিবর্ধক গুণের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত প্রফেসর রত্না রায়। এছাড়া এর নানা ঔষধি গুণ সম্পর্কেও আগে থেকে ধারণা ছিল তার। এ কারণেই সহকর্মীদের নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ক্যান্সার প্রতিরোধী চিকিৎসায় করলার কার্যকারিতা নিয়ে অনুসন্ধানে সচেষ্ট হন তিনি।

গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়ে রত্না রায় ও তার সহকর্মীরা স্তন, মূত্রনালি, মাথা ও ঘাড়সহ বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার কোষের ওপর করলার নির্যাস প্রয়োগ করে দেখেন। এ নির্যাস প্রয়োগের ফলে এসব ক্যান্সার কোষের ছড়িয়ে পড়া ও বর্ধনশীলতা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে গবেষণাগারে মাউস মডেলে পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, জিহ্বার ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও করলার নির্যাস বেশ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।

এরপর গভীর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গেছে, করলার নির্যাস ক্যান্সার কোষের বর্ধনশীলতা ও ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী গ্লুকোজ (সাধারণ শর্করা) ও চর্বিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। মূলত এ পদ্ধতিতেই করলার রস ক্যান্সার টিউমারের বেড়ে ওঠা বন্ধ করে দেয়। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ক্যান্সার কোষকে মেরেও ফেলে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন