টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে রানের জন্য
ধুঁকছিল রাজশাহী রয়্যালস। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে খুলনা
টাইগার্সের বিপক্ষে ১৪.২ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ছিল ৯৯/৪। হাতে মাত্র ৩৪ বল। এ
অবস্থায় রাজশাহীর ইনিংস দেড়শো পেরোবে কিনা এ নিয়েই ছিল সংশয়। কিন্তু রাজশাহীর নেতা
যে আন্দ্রে রাসেল। আর তাকে সুযোগ্য সঙ্গ দিলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ
নওয়াজ। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৩৪ বলের জুটিতে ৭১ রান তুলে নিলেন দুজনে। এ
দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ১৭০ রানের বড় পুঁজি পেয়ে গেল রাজশাহী।
দলের অবস্থা যা-ই হোক রাসেল
উইকেটে থাকা মানেই ঘটে যেতে পারে যে কোনো কিছুই। বুধবার এ মিরপুরেই ফাইনালে ওঠার
ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে দেন রাসেল। জিততে হলে শেষ ২
ওভারে রাজশাহীর প্রয়োজন পড়ে ৩১ রান। রাসেলের সঙ্গী ১০ নম্বরে খেলতে নামা আবু
জায়েদ। কিন্তু কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি রাজশাহীর জয়ে। চার আর ছক্কায় জয় নিশ্চিত
করেই মাঠ ছাড়েন এ ক্যারিবীয় হারিকেন। তার হার না মানা ৫৪ রান আসে মাত্র ২২ বলের
কনকর্ডে চড়ে।
গতকাল ফাইনালেও আগের ম্যাচের স্মৃতি
ফিরিয়ে আনলেন রাসেল। আর তাকে সুযোগ্য সঙ্গ দিলেন রাজশাহীর পাকিস্তানি রিক্রুট
নওয়াজ। দুই পাশ থেকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের এক অনুপম প্রদর্শনী উপভোগ করল মিরপুরের
দর্শকরা। টি২০ ক্রিকেট কতটা উপভোগ্য হতে পারে তারই এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচটি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে নেতাকেও ছাপিয়ে উঠলেন
নওয়াজ। মাত্র ২০ বলের ইনিংসে অপরাজিত থাকলেন ৪১ রানে। সাজানো ইনিংসটিতে ৬
বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারলেন দুটো। স্ট্রাইক রেট ২০৫.০০। রাসেল অপরাজিত থাকলেন
২৭ রানে। তার ইনিংসটিতে তিনটি ছক্কার মার। এ দুজনের ব্যাটিংয়ের সামনে খুলনার
বোলাররা কতটা অসহায় ছিল, এটা অনুধাবনের জন্য একটিমাত্র তথ্যই যথেষ্ট। রাজশাহীর ইনিংসে শেষ তিন
ওভারে রান এসেছে যথাক্রমে ২১,
১৮ ও ১৫।
এর আগে টস জিতে রাজশাহীকে ব্যাটিংয়ে
পাঠান খুলনা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। শুরু থেকেই অধিনায়কের সিদ্ধান্তের
কার্যকারিতার প্রমাণও রাখেন খুলনার বোলাররা। শুরু থেকেই রানের জন্য হাঁসফাঁস করেছে
রাজশাহীর টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। চটজলদি বিদায় নেন ওপেনার আফিফ হোসেন (৮
বলে ১০)। রান তুলতে যথেষ্টই গলদঘর্ম হতে হয় লিটন দাস (২৮
বলে ২৫) ও শোয়েব মালিককে (১১ বলে ৯)। উইকেট আগলে রেখে স্কোরবোর্ড সচল রাখার চেষ্টা করেন ইরফান
শুক্কুর। কিন্তু দলের রান রেট বাড়ানোর সময়টাতে আউট হয়ে যান তিনিও। ৩৫ বল খেলে ৫২
রান করেন ইরফান। বলাবাহুল্য রাজশাহী ইনিংসে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরিটিও তারই। দলীয়
রান রেট তখন সাতেরও নিচে। ব্যাটসম্যানদের ওপর বোলারদের সুস্পষ্ট প্রাধান্য। এমন
অবস্থায় রাসেলের সঙ্গী হলেন নওয়াজ।
শুরু থেকেই এ জুটি মুশফিকদের সাজানো
বাগান এলোমেলো করে দিতে থাকলেন। যে ফাঁসটা ছিল ব্যাটসম্যানদের ওপর সেটাই রাসেল-নওয়াজ পরিয়ে
দিলেন বোলারদের ওপর। শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করা আমির তার শেষ ওভারে দিলেন ১৮
রান। ফ্রাইলিঙ্ক তার শেষ ওভারে খরচ করলেন ২১ রান। ইনিংস তথা সফিউলের শেষ ওভার থেকে
জমা পড়ল ১৫ রান।