১০০ মিলিয়ন ইউরোর মিডফিল্ডে বাজিমাত

সৌদি আরবের জেদ্দায় সদ্যই স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে নিল রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ভ্যালেন্সিয়াকে নিয়ে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকোকে টাইব্রেকারের রোমাঞ্চে হারায় জিনেদিন জিদানের দল। আসরে মাত্র ১০০ মিলিয়ন ইউরোর মিডফিল্ড নিয়ে চমকই দেখালেন জিদান। রিয়ালের সাফল্যের কারিগর মিডফিল্ডেরপঞ্চপাণ্ডব

লুকা মডরিচ, ইসকো, টনি ক্রুস, ক্যাসেমিরো ফেদে ভালভার্দে যাত্রায় ছিলেন অনন্য। ফুটবলের বর্তমান বাজারে মাত্র ১০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করেও এতটা ভালোভাবে তাদের ব্যবহার করাটা জিদান রিয়ালের জন্য নজিরবিহীন।

মডরিচের পেছনে রিয়ালের খরচ ৩৫ মিলিয়ন ইউরো, ইসকোর জন্য লস ব্লাঙ্কোসদের খরচ ৩০ মিলিয়ন ইউরো আর জার্মান তারকা ক্রুসকে কেনা হয় ৩০ মিলিয়ন ইউরোয়। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার ফেদে ভালভার্দে উভয়ের জন্যই রিয়ালের ব্যয় মাত্র মিলিয়ন ইউরো করে! এই ১০০ মিলিয়নের মিডফিল্ডই চলতি মৌসুমে রিয়ালের হয়ে দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছে, আশা দেখাচ্ছে বড় কিছুর।

বার্সেলোনার সঙ্গে তুলনা করলে এটা অবিশ্বাস্যই। গত গ্রীষ্মে এক ফ্রেংকি ডি ইয়াংকে কিনতেই ৭৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে কাতালান জায়ান্টরা। এছাড়া চিলিয়ান মিডফিল্ডার আরতুরো ভিদালের জন্য ১৯ মিলিয়ন ইউরো, ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার আর্থারের জন্য ৩১ মিলিয়ন ইউরো, ক্রোয়াট মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচের জন্য ১৮ মিলিয়ন ইউরো। তবে বার্সেলোনার অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার সার্জিও বুসকেটস কাতালানদের একাডেমি থেকে উঠে এসেছেন বলে তার জন্য কোনো অর্থ খরচ হয়নি। যদিও খেলোয়াড়টিকে উচ্চ পারিশ্রমিক দিতে হয়। তিনি সপ্তাহে পান লাখ ৮৭ হাজার ইউরো। এছাড়া ক্লাবের কাছে অপরিহার্য বলেই ২০১৫ সালে চুক্তিতে তার বাই-আউট ক্লজ ১৫০ মিলিয়ন ইউরো করা হয়। যদিও তিনি ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়ে রয়েছেন এখন।  

বার্সেলোনার ব্যয়বহুল মিডফিল্ডের সঙ্গে রিয়ালেরসস্তামিডফিল্ডের তুলনা করলে বিস্মিতই হবেন যে কেউ। এমনকি মডরিচকে যখন ২০১২ সালে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোয় টটেনহামের কাছ থেকে কেনা হয়, তখন অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছেন। তাদের মনে হয়েছে, এতটা বেশি ফি দিয়ে কেনার মতো উচ্চমানের খেলোয়াড় তিনি নন। কিন্তু সন্দেহবাদীদের ভুল তিনি ভেঙে দিয়েছেন। সাত-আট বছর ধরে তিনি দলটির মধ্যমাঠের প্রাণ। বার্নাব্যুতেই ক্যারিয়ারের শিখরে পৌঁছেছেন, ক্লাবটির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগই জিতেছেন চারটি। জিতেছেন ব্যালন ডিঅর এবং ২০১৮ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও তার হাতে উঠেছে।

দেশজ মেধাবী হিসেবে মালাগা থেকে ২০১৩ সালে ইসকোকে কেনা হয়। রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পর তিনি হয়তো পুরোটা সময় উপভোগ করতে পারেননি, কখনো কখনো সুযোগও পাননি। কিন্তু জিদানের দ্বিতীয় অধ্যায়ে তিনি দুর্দান্ত ফুটবল খেলছেন, এতে তার বর্তমান বাজারমূল্যও বেড়ে হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ইউরো।

২০১৪ সালে ব্রাজিলের মাটিতে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করার পর বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে রিয়ালে নাম লেখান ক্রুস। সেই থেকে রিয়ালের মধ্যমাঠের নিউক্লিয়াস তিনি। লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে জিতেছেন তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। ৩০ বছর বয়সী খেলোয়াড়টি ম্যানইউতে যোগ দিতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। 

ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো কৃতজ্ঞ থাকতে পারেন জিদানের কাছে। রিয়ালেরবিদল কাস্তিয়ার কোচ হিসেবে কাজ করার সময় জিদানই ক্যাসেমিরোকে সামনে নিয়ে আসেন এবং সিনিয়র দলের কোচ হয়ে আসার পর তিনিই খেলোয়াড়টিকে মূল দলে অভিষেক ঘটান। এরপর অনবদ্য পারফরম্যান্সে দ্রুতই উন্নতি করেন তিনি। এখন তো রিয়ালের মূল দলের অপরিহার্য নাম ক্যাসেমিরো।

ক্যাসেমিরো যদি জিদানের প্রথম স্পেলে সাফল্যের অন্যতম কারিগর হন, তবে দ্বিতীয় স্পেলে নামটি হবেন সন্দেহাতীতভাবেই ভালভার্দে। উরুগুইয়ান খেলোয়াড়টি এমন সময়ে তারা হয়ে জ্বলছেন, যখন গ্রীষ্মে কোনো মিডফিল্ডার বার্নাব্যুতে আসেননি। যদিও কথা হচ্ছিল আয়াক্সের ডনি ফন ডি বিক ম্যানইউর পল পগবাকে নিয়ে। শঙ্কা ছিল, মডরিচের চোটে মিডফিল্ডে ভুগতে পারেন জিদান, তখনই ভালভার্দে শূন্যতা পূরণ করে দিলেন। এখন রিয়ালের মিডফিল্ডের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছেন ২১ বছর বয়সী ভালভার্দে। তার কারণেই এখন মিডফিল্ডার কেনার তাড়া নেই রিয়ালের, যা কয়েক মাস আগেও অগ্রাধিকার পাচ্ছিল। মার্কা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন