কমিশনের সঙ্গে সরকারের বৈঠক

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারকে গতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশকিছু স্বল্প দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথমে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। আর পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালসহ সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর বিএসইসির পক্ষে সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক . এম খায়রুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষ্যে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নীতিনির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বল্পমেয়াদি বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো, মার্চেন্ট ব্যাংকার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য কতিপয় সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করা, আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা দেশের বাজারে আস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বাড়ানোর লক্ষ্যে বহুজাতিক সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া পর্যায়ক্রমে পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সভায় আলোচনা হয়।

গতকালের বাজার পরিস্থিতি: গতকাল লেনদেনের শুরুতেই ক্রয়চাপের প্রভাবে সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়, যা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। গতকাল দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮১ পয়েন্ট বা শতাংশ বেড়ে হাজার ১৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচকের পাশাপাশি শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দিনের ব্যবধানে ২৬ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ৯৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ এদিন প্রায় ৩৫ পয়েন্ট কমে দিন শেষে শেষে হাজার ৪০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর আর ডিএসইর চীনা সূচক সিডিএসইটি ১৯ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল দিন শেষে ৮৪৫ পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, রেনাটা, অলিম্পিক বেক্সিমকো ফার্মার।

গতকাল ডিএসইতে সূচকের পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেনও বেড়েছে। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে ২৬৭ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২৪২ কোটি টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৯৪টির, কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৭টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, ডিএসইর লেনদেনের মোট ১৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ করে দখলে নিয়েছে প্রকৌশল ব্যাংক খাত। ডিএসইর লেনদেনের শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর শতাংশ করে দখলে নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সাধারণ বীমা খাত।

স্টক এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, এডিএন টেলিকম, সি পার্ল বিচ রিসোর্চ, ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণফোন, রিং সাইন টেক্সটাইল, বীকন ফার্মা, কেপিসিএল   স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস।

ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকার কোম্পানিগুলো হলো আনলিমা ইয়ার্ন, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মা, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, ফার্স্ট ফিন্যান্স, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স   স্ট্যান্ডার্ড  ব্যাংক।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর কমার দিক দিয়ে শীর্ষ কোম্পানিগুলো হচ্ছে এসএস স্টিল, এডিএন টেলিকম, আজিজ পাইপস, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, ইউনাইটেড এয়ার, রিং সাইন টেক্সটাইল, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, আরামিট সিমেন্ট, গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো নর্দার্ন জুট।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সিএসসিএক্স দিনের ব্যবধানে প্রায় ১৩০ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৬৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৫০৫ পয়েন্টে। গতকাল লেনদেন হওয়া ২১৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০৩টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৮৭টি, আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন