পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে তুষার ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১শ-তে দাঁড়িয়েছে। তবে অলৌকিকভাবে বরফে আটকে পড়েও ১৮ ঘণ্টা বেঁচে ছিল ১২ বছরের এক কিশোরী। গতকাল বুধবার তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে তার মা নিজে গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে আগামীকাল শুক্রবার থেকে তুষারপাত আরো বাড়তে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
গত সোমবার ভারি বৃষ্টিপাত ও তুষারধসে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নীলম উপত্যকায়। এ ঘটনায় শুধু নীলমেই কমপক্ষে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারকারীরা সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার জীবিত উদ্ধার করা হয় সামিনা বিবি নামে ওই কিশোরীকে। সামিনা ও তার পরিবার তাদের গ্রামের আরো অনেকের সঙ্গে তিনতলার একটি বাসায় থাকতো। তুষাপাতে ওই ভবনটি পুরোটিই বরফে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। এসময় সামিনা একটি ঘরে আটকা পড়ে।
উদ্ধারের পর মুজাফ্ফরাবাদের একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে ওই কিশোরীকে। সেখানেই ভয়াবহ এই ১৮ ঘণ্টার বর্ণনা দিয়েছে সামিনা। নিজেকে ‘ভাগ্যবতী’ উল্লেখ করে এই কিশোরী জানিয়েছে, সে ভেতরে উদ্ধারের অপেক্ষায় সময় পার করছিল। কখনো কখনো সাহায্যের জন্য চিৎকারও করেছে। সে এই ১৮ ঘণ্টায় একটুও ঘুমাতে পারেনি। তার পায়ে আঘাত লেগেছে এবং মুখ দিয়েও রক্ত পড়ছিল।
এই তুষার ধসেই এক ছেলে ও অন্য এক মেয়ে হারিয়েছেন সামিনার মা শাহনাজ বিবি। তিনি এত দীর্ঘ সময় পর মেয়েকে জীবিত ফিরে পাওয়াটাকে মনে করছেন অলৌকিক একটি ঘটনা। অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তারা একরকম আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন বলেও জানান এই নারী।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে তুষারধসের ঘটনায় কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১শ-তে।
এর আগে ২০১২ সালে ভারত সীমান্তের কাছাকাছি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল। সেই বার তুষার আচ্ছাদিত হয়ে কমপক্ষে ১২৪ সেনা ও ১১ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়।