৬ বছরের সর্বনিম্নে চীনের ইস্পাত রফতানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০১৫ সালে চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ইস্পাত রফতানি হয়েছিল। এর পর থেকে দেশটির ইস্পাত রফতানি খাতে ক্রমে মন্দা ভাব দেখা গেছে। ধারাবাহিকতায় বিদায়ী বছরে চীন থেকে শিল্প ধাতুটির রফতানি আগের বছরের তুলনায় শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্য দিয়ে চীনের ইস্পাত রফতানি বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়েছে। নিজস্ব বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা চীন থেকে ইস্পাত রফতানি কমিয়ে আনছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রয়টার্স।

চীনা কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে চীনা রফতানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ২৬ লাখ ৪০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত রফতানি করেছিল। পরের বছর দেশটি থেকে শিল্প ধাতুটির রফতানি বেড়ে দাঁড়ায় কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার টনে। প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে চীন থেকে সব মিলিয়ে ১১ কোটি ২৪ লাখ টন ইস্পাত রফতানি হয়েছিল। চীনের ইতিহাসে এটাই ইস্পাত রফতানির সর্বোচ্চ রেকর্ড।

পরের বছর থেকে চীনা ইস্পাত রফতানিতে ধারাবাহিক মন্দা ভাবের সূচনা। ২০১৬ সালে দেশটি থেকে শিল্প ধাতুটির রফতানি কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টনে। পরের বছর তা আরো কমে দাঁড়ায় কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টন। মন্দা ভাবের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে চীন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার টন ইস্পাত রফতানি হয়েছে।

আর বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে শিল্প ধাতুটির রফতানি আরো কমে দাঁড়িয়েছে কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫০ লাখ ৫০ হাজার টন কম। ২০১৩ সালের পর বিদায়ী বছরে চীন থেকে সবচেয়ে কম ইস্পাত রফতানি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাজস্ব দপ্তর। একই সঙ্গে ২০১৫ সালের পর থেকে টানা চার বছর চীনা ইস্পাত রফতানিতে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে।

এদিকে মাসভিত্তিক হিসাবে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনা রফতানিকারকরা সব মিলিয়ে ৪৬ লাখ ৮০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত রফতানি করেছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির রাজস্ব দপ্তর, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক শতাংশ কম। তবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমলেও নভেম্বরের তুলনায় গত ডিসেম্বরে দেশটি থেকে শিল্প ধাতুটির রফতানি বেড়েছে দশমিক শতাংশ।

সাংহাইভিত্তিক ট্রেডাররা জানান, বিদায়ী বছরটি চীনা ইস্পাত রফতানিকারকদের জন্য সুখের সময় ছিল না। টানা চার বছরের ধারাবাহিকতায় খাতে বিদ্যমান মন্দা ভাব আরো জোরদার হয়েছে। এর পেছনে বড় একটি কারণ অভ্যন্তরীণ বাজারে ইস্পাতের চাহিদা প্রবৃদ্ধি। কারণে ব্যবসায়ীরা রফতানির পরিবর্তে নিজেদের বাজারে পণ্য বিক্রিতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। এর প্রভাব পড়েছে ইস্পাতের সামগ্রিক রফতানিতে।

কয়েক বছর ধরে চীনের ইস্পাত উৎপাদন খাত বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত শীত মৌসুমে মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে চীন সরকার তুলনামূলক ছোট নিম্নমানের ইস্পাত কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছে। দূষণের দায়ে অনেক কারখানার কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। এটাও দেশটি থেকে ইস্পাত রফতানি কমে আসার অন্যতম একটি কারণ।

এদিকে দেশটির রাজস্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চীনের বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ২৩ লাখ টন ইস্পাত আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ কম। ২০১৮ সালে দেশটিতে কোটি ৩১ লাখ ৭০ হাজার টন ইস্পাত আমদানি হয়েছিল। মূলত ক্রমবর্ধমান চাহিদার জের ধরে প্রতি বছর চীনা আমদানিকারকরা বিপুল পরিমাণ ইস্পাত আমদানি করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন