ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে ভারতের ভিস্তারা

চারটি বোয়িং ৭৮৭-৯ কিনতে পারে বিমান বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয়টি বোয়িং ৭৮৭- উড়োজাহাজ কেনার কথা ছিল ভারতীয় ক্যারিয়ার ভিস্তারার। তবে পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে ভারতের টাটা সন্স সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের যৌথ উদ্যোগের ক্যারিয়ারটি। আর ভিস্তারার ক্রয়াদেশ বাতিল করা এসব উড়োজাহাজের চারটি কিনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আগ্রহী বলে জানিয়েছে এভিয়েশন খাতসংশ্লিষ্ট বিপণন কৌশলবিষয়ক বহুজাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিম্পলফ্লাইং।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে বোয়িংকে ছয়টি ৭৮৭-৯এস মডেলের উড়োজাহাজ নির্মাণের অর্ডার দেয় ভিস্তারা। এর বাইরে চুক্তিতে আরো চারটি উড়োজাহাজ কেনার সুযোগ রাখা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে বোয়িংয়ের কারখানায় উড়োজাহাজগুলো নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। তবে চাহিদা অনুযায়ী উড়োজাহাজটি নির্মাণ না হওয়ায় ক্রয় পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে পারে ভিস্তারা।

নিউইয়র্ক সিডনির মতো দূরবর্তী স্থানে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় ভিস্তারা। পরিকল্পনা থেকে উড়োজাহাজগুলোর ক্রয়াদেশ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘ যাত্রাপথের জন্য অতিরিক্ত পাইলট রাখার পরিকল্পনা ছিল ভিস্তারার। নির্মাণকাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়া উড়োজাহাজটি ২৯৯ আসনবিশিষ্ট হলেও এতে কেবিন ক্রুদের বিশ্রামের জন্য স্লিপিং কোয়ার্টার রাখা হয়নি। আর চাহিদার সঙ্গে এই অসামঞ্জস্যের কারণেই ভিস্তারা ক্রয় পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বিমান ভিস্তারার ক্রয়াদেশ বাতিল করা এসব উড়োজাহাজের চারটি কিনতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। বাংলাদেশ বিমান ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে বিরতি দিয়ে নিউইয়র্ক টরেন্টোতে নতুন ফ্লাইট চালু করবে বলে দাবি তাদের।

এর আগে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস গত বছরের অক্টোবরে সিয়াটলের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে আকর্ষণীয় মূল্যে দুটি বোয়িং ৭৮৭- মডেলের উড়োজাহাজ কেনে। চীনের হাইনান এয়ারলাইনস আর্থিক সমস্যার কারণে ক্রয়াদেশ বাতিল করলে উড়োজাহাজ দুটি বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে রয়েছে বোয়িং থেকে সরাসরি কেনা ১০টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উড়োজাহাজ। এর বাইরে লিজ চুক্তিতে আনা হয়েছে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এবং দুটি ড্যাশ- কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ। গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্ত হয় দুটি ৭৮৭- ড্রিমলাইনার।

চলতি বছরের জুনের মধ্যে বিমানের বহরে যুক্ত হবে তিনটি নতুন ড্যাশ- কিউ৪০০ উড়োজাহাজ। সম্প্রসারিত বহর দিয়ে চলমান রুটসমূহে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি বছরই ম্যানচেস্টার, নারিতা, কলম্বো, মালে নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে সেবা পরিচালনা করছে। গত জানুয়ারি নতুন একটি ড্রিমলাইনার বাংলাদেশ-সিলেট ম্যানচেস্টার রুটে উদ্বোধন হয়েছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের মধ্যে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে তারা।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন উড়োজাহাজ কেনার জন্য চুক্তি করে বিমান। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ চারটি বোয়িং ৭৮৭- ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ। বিমানের ১০টি বোয়িংয়ের মধ্যে আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল রাজহংস নামে চারটি ড্রিমলাইনারের নাম পছন্দ বাছাই করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত নামে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং মেঘদূত ময়ূরপঙ্খী নামে দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০-এর নামও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিমানের বহরে চতুর্থ বোয়িং ৭৮৭- ড্রিমলাইনার যুক্ত হয়। এর আগে ২০১৮ সালের আগস্ট ডিসেম্বর মাসে প্রথম দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭- ড্রিমলাইনার আকাশবীণা হংসবলাকা ঢাকায় এসে পৌঁছে। গত জুলাই মাসে তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭- ড্রিমলাইনার গাঙচিল ঢাকায় অবতরণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন