সিরাজগঞ্জের ছেলের সোনার বুট

অশোক ব্যানার্জী, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের ফয়সাল আহমেদ ফাহিম বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন।

২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সোনার বুট জিতেছিলেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৮ সাফেও জিতেছিলেন সোনার বুট। বয়সভিত্তিক ফুটবলে আলো ছড়ানো কিশোর সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে ঘরোয়া ফুটবলেও উজ্জ্বল। বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে জাতীয় দলে ফাহিমকে ডেকেছেন কোচ জেমি ডে। গত শুক্রবার সকালে জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন কিশোর স্ট্রাইকার।

জেলার কৃতী সন্তান জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পৌরসভার মাহমুদপুর মহল্লাসহ জেলাবাসীর সর্বস্তরের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।

জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে ফাহিম জানান, ‘আমি বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের ফোন পাওয়ায় বিস্মিত হয়ে যাই। আমাকে বললেন, তুমি তাড়াতাড়ি ক্যাম্পে চলে আসো। সঙ্গে সঙ্গেই সিরাজগঞ্জ থেকে রাতেই রওনা হই ঢাকার উদ্দেশে জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্পে। শুক্রবার সকালে অনুশীলনে যোগ দিই। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। আমার খুবই ভালো লাগছে।এত কম বয়সে দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে ফাহিম বলেন, ‘এতে করে আমার জন্য অনেক ভালো হয়েছে। আশা করি, সামনের চ্যালেঞ্জ খুব সহজভাবে মোকাবেলা করতে পারব। আমি দেশবাসী আমার জেলা সিরাজগঞ্জবাসীর কাছে দোয়া কামনা করছি, যেন বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য ভালো কিছু করতে পারি। বাংলাদেশকে যেন স্ট্রাইকার সংকটে আর ভুগতে না হয়। আমি সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের হয়ে লড়তে প্রস্তুত।

কিশোর ফাহিমের ফুটবলের শুরুটা হয়েছিল সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী মাছুমপুর ক্রীড়াচক্র ক্লাব থেকে।

সিরাজগঞ্জের সাবেক খেলোয়াড়দের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ‘দীর্ঘ বিরতির পর সিরাজগঞ্জ থেকে ফাহিম জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমার চাওয়া, ফাহিম যেন সেই সালাউদ্দিন, বাদল রায়, সালাম মুর্শিদী, কায়সার হামিদের মতো গোল মাস্টার ফুটবলার হতে পারে।

সিরাজগঞ্জের জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ বলেন, ‘ফাহিম জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় আমরা গর্বিত। শুভকামনা রইল ফাহিমের জন্য।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল ইসলাম সফি বলেন, ‘ফাহিম প্রতিভাবান খেলোয়াড়। আমাদের এখানে সে ভালো খেলেছে। নিজের যোগ্যতায় দক্ষতায় জেলার সেরা খেলোয়াড় হয়েছে। ফাহিম নিজেকে চিনিয়ে ছিল অনূর্ধ্ব-১৫ সাফেই। হ্যাটট্রিকসহ চার ম্যাচে সাত গোল করে জিতেছিল সোনার বুট। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাই পর্বে কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে তার পা থেকে এসেছিল দারুণ এক গোল।

স্ট্রাইকার সংকটের দেশের ফুটবলে নিজেকে দারুণ প্রতিশ্রুতিময় আস্থার ফুটবলার প্রমাণ করে গত বছর অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আবারো মেলে ধরে জিতেছেন সোনার বুট। দুর্দান্ত গতির সঙ্গে বলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণটা চোখে পড়ার মতো। উইংয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে সেন্ট্রাল পজিশনে খেলে থাকেন। পারেন সঠিক সময় সঠিক জায়গায় থাকতে। দূর থেকে পোস্টে শট নেয়ার দক্ষতা একটু আলাদাভাবেই পরিচয় করিয়ে দেয় ফাহিমকে।

বাংলাদেশের ফুটবলে অনেক প্রতিভাই এসেছে। কিন্তু সঠিক পরিচর্যার অভাবে অনেকেই ঝরে পড়েছে। ফাহিম নিজেকে কত উঁচুতে তুলতে পারেন, সেটাই এখন দেখার ব্যাপার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন