এনামুল ও রুপন চার দিনের রিমান্ডে

ক্যাসিনোকাণ্ডে দীর্ঘদিন পলাতক গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূইয়ার ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই দুই সহোদরের আশ্রয়দাতা এবং ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী শেখ সানি মোস্তফার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একই আদালত।

আজ মঙ্গলবার মানি লন্ডারিং আইনের পৃথক দুই মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এ রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ডকৃত ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের শেয়ার হোল্ডার এনু গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং তার ভাই রুপন ভূইয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার আসামি এনু এবং সনি মোস্তফার গেন্ডারিয়া থানার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর মেহেদী মাকসুদ দশ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। অন্যদিকে একই কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় আসামি রুপনের দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। 

আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট সাম্মী আক্তার ও অ্যাডভোকেট ওসমান গণি রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে এনু ও রুপনের ৪ দিন করে এবং সনি মোস্তফার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত সোমবার সকালে আসামিদের ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিআইডি। 

ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপনের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে এনুর বাসা থেকে  নগদ ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং এক কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের ২ কেজি ৯০৮ দশমিক ৯৫ গ্রাম ওজনের ১৯ প্রকার স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার হয়। অন্যদিকে রুপনের বসা থেকে নগদ ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩শ টাকা এবং স্বর্ণ ২ কেটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যমানের স্বর্ণালংকার উদ্ধার হয়। পরে ওই ঘটনার পর এনু ও রুপনের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর, ওয়ারী এবং গেন্ডারিয়া থানায় মানিলন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাতটি মামলা দায়ের করেন।

সিআইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যাসিনোর অন্ধকার জগৎ তাদের কাছে ধরা দেয় অনেকটা আলাদিনের চেরাগ হয়ে। পুরান ঢাকার কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় এনু ও রুপনের নামে একের পর এক হিসাব খোলা হয়। সবচেয়ে বেশি হিসাব খোলা হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে। তাদের দৃশ্যমান কোনো আয়ের উৎস নেই। তবুও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় এনু-রুপনের ১৯টি বাড়ি ও একাধিক প্লট রয়েছে।

এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার ৩৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ার পর গত ২৩ অক্টোবর পৃথক দুই মামলা দায়ের করে দুদক। এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।

অন্যদিকে অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধ পন্থায় নামে-বেনামে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দুদকের অপর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী মামলা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন