ক্যাসিনো কারবারি দুই ভাই এনামুল ও রূপন ভূঁইয়া গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্যাসিনো কারবারি দুই ভাই এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রাজধানীর কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় অভিযান চালিয়ে গতকাল ভোরে দুজনকে গ্রেফতার করা হয় বলে সিআইডির গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানান। এ সময় শেখ মোস্তফা নামে তাদের এক সহযোগীকেও ওই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপর দুপুরে মালিবাগে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, শেখ মোস্তফার সহযোগিতা নিয়ে শুভাঢ্যার একটি বাড়িতে ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন এনামুল ও রূপন। গ্রেফতারের সময় তারা বাসার টয়লেটের ওপর ফাঁকা অংশে লুকিয়ে ছিলেন। ওই বাসা থেকে ৪০ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র্যাব। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়ায় প্রথমে এনামুল ও রূপনের বাড়িতে এবং পরে তাদের এক কর্মচারী ও এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুকভর্তি প্রায় ৫ কোটি টাকা, আট কেজি স্বর্ণ ও ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে সে সময় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।

সে সময় র্যাব জানিয়েছিল, উদ্ধারকৃত অর্থ-সম্পদের উৎস ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো। ওই ঘটনার পর মোট সাতটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনা এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে করা চারটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।

সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, র্যাবের ওই অভিযানের পর এনামুল ও রূপন কক্সবাজারে চলে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। সেখান থেকে তারা নৌপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। তাতে ব্যর্থ হয়ে কেরানীগঞ্জে এসে আশ্রয় নেন এবং ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করান। ওই পাসপোর্ট দিয়ে প্রতিবেশী দেশের ভূমি ব্যবহার করে নেপাল চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। 

সিআইডির ভাষ্যমতে, আওয়ামী লীগ নেতা এ দুই ভাই ছিলেন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো কারবারের হোতা। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দুই ভাইয়ের নামে ২২টি বাড়ি ও জমি এবং পাঁচটি যানবাহনের সন্ধান পাওয়া গেছে।

ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছেন, প্রথমে ওই ক্লাবে তারা ওয়ান টেন নামে একটি জুয়া চালু করেন। পরে নেপালিদের মাধ্যমে সরঞ্জাম এনে সেখানে পুরোদস্তুর ক্যাসিনো চালু করেন।

দুই ভাইয়ের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৯১টি ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে প্রায় ১৯ কোটি ১১ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এসব ব্যাংক হিসাব এখন অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন