মোহাম্মদ আমিরের বিধ্বংসী বোলিংয়ে
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে পৌঁছে গেল খুলনা টাইগার্স। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা
জাতীয় স্টেডিয়ামে কোয়ালিফায়ার পর্বে রাজশাহী রয়্যালসকে ২৭ রানে হারিয়েছে মুশফিকুর
রহিমের দল। শুরুতে ব্যাট করে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি খুলনা। কিন্তু আমিরের নৈপুণ্যে
সেই সংগ্রহও রাজশাহীর সামনে হয়ে যায় পাহাড়সম। যার পেছনে ছুটতে গিয়ে শোয়েব মালিকের
দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও ১৩১ রানে থেমে যায় তারা। এর আগে নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ
ব্যাটিংয়ে খুলনা জড়ো করে ৩ উইকেটে ১৫৮ রান। এখন ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে
চট্টগ্রামের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে রাজশাহীকে।
লক্ষ্য বড় না হলেও উইকেট বিবেচনায়
রাজশাহীর জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ নিতেই পারল না
রাজশাহী। শুরু থেকেই বিপর্যস্ত গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত খেলা দলটি। ফাইনালে যাওয়ার
লড়াইয়ে ইনিংসের ৩ বলেই লিটন দাসের উইকেট হারায় রাজশাহী। ২ রান করা লিটন দাসকে
বোল্ড করে খুলনাকে দারুণ সূচনা এনে দেন আমির। খুলনার বোলারদের সামনে খুব একটা
স্বস্তিতে খেলতে পারছিলেন না আফিফ হোসেন ও শোয়েব মালিক। দলীয় ২২ রানে চাপে থাকা
আফিফকে (১১) ফের খুলনাকে সাফল্য এনে দেন আমির। একই ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই
সাজঘরের পথ ধরেন অভিজ্ঞ অলক কাপালী। তাকেও ফেরান বিধ্বংসী আমির। প্রথম ৩ উইকেট
শিকার করা আমির একটু অপেক্ষায় রেখে দলের চতুর্থ উইকেটটি তুলে নেন রবি ফ্রাইলিংক।
স্কোরবোর্ডে এক রান যোগ করা রবি বোপারা সাজঘরের পথ ধরেন রাইলি রুশোর দুর্দান্ত এক
ক্যাচে। এরপর আমির তুলে নেন নিজের চতুর্থ উইকেটটিও। এবার রানের খাতা খোলার আগে আউট
আন্দ্রে রাসেল। আমিরের তোপে মাত্র ২৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রাজশাহীর হার অনেকটাই
নিশ্চিত। ফাইনালে ওঠার ম্যাচে আমিরের এই আগুনে বোলিং যেন মনে করিয়ে দিচ্ছিল
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে সেই ফাইনালকে। সেই সঙ্গে আমির আরো একবার
প্রমাণ করলেন তিনি বরাবরই বড় মঞ্চের খেলোয়াড়। পরে এসে ফেরান তাইজুল ও মালিককেও (৮০)।
মালিক অবশ্য চেষ্টা করেছিলেন কঠিন কাজটি করার জন্য। কিন্তু শুরুর ব্যর্থতার কারণে
পেরে ওঠেননি তিনি। ম্যাচে আমিরের বোলিং ফিগার ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট। বিপিএল
ইতিহাসে এ প্রথম ৬ উইকেট নিলেন কোনো বোলার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে
খুলনার শুরুটাও ভালো ছিল না। দলীয় ১৫ রানে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮ রান করা
মিরাজকে ফেরান মোহাম্মদ ইরফান। কোনো রান না করে ইরফানের বলেই ফিরে যান রাইলি রুশো।
এরপর দলকে টানতে থাকেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ও শামসুর
রহমান। যদিও শামসুর ছিলেন কিছুটা ধীরগতির। এ জুটি ভাঙে দলীয় ৯৩ রানে। ৩১ বলে ৩২
রান করা শামসুর ফেরেন বোপারার শিকার হয়ে। পরে মুশফিক ও শান্তর জুটিতে ছুটতে থাকে
খুলনা। এর মাঝে ১৬ বলে ২১ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হন মুশফিক। তবে অপরাজিত থেকে
যান শান্ত। ৫৭ বলে সাত চার ও চার ছক্কায় ৭৮ রান করেন এ ওপেনার। রাজশাহীর হয়ে ১৩
রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ইরফান। বোপারা নেন ১ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইগার্স: ২০
ওভারে ১৫৮/৩ (শান্ত ৭৮*, শামসুর ৩২, মুশফিক ২১; ইরফান ২/১৩, বোপারা ১/২৪)। রাজশাহী রয়্যালস:
২০ ওভারে ১৩১/১০ (মালিক ৮০, তাইজুল
১২, রাব্বি
১১*; আমির
৬/১৭, মিরাজ ২/৬)।
ফল: খুলনা টাইগার্স ২৭ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ
আমির (খুলনা)।