নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়ও
নিষ্ফলা। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। ভাগ্য পরীক্ষায় অবশ্য
শেষ পর্যন্ত জয় রিয়াল মাদ্রিদের। টাইব্রেকারে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো
মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জিতে সুপার কাপের শিরোপা নিজেদের করে নিল রিয়াল।
এর আগে ২০১৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল মাদ্রিদের এ দুই দল।
সেবারও ফাইনাল জিতেছিল রিয়াল।
সৌদি আরবের জেদ্দায় সেমিফাইনালে কৌশল
বদলে বাজিমাত করেছিল রিয়াল। ফাইনালেও সেই একই কৌশল নিয়ে দল নামান জিনেদিন জিদান।
কিন্তু ৪-৩-২-১ ফরম্যাটের ট্যাকটিস নিয়ে যেন পড়াশোনা করেই আসে অ্যাতলেটিকো
মাদ্রিদ। করিম বেনজেমা-এডেন হ্যাজার্ড না থাকায় উইং ও মিডফিল্ডের ওপরই বেশি নির্ভরতা ছিল
রিয়ালের। কিন্তু নিজেদের রক্ষণে দৃঢ়তা দেখিয়ে রিয়ালকে খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে
দেয়নি অ্যাতলেটিকো। বিপরীতে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের আক্রমণ ছিল বেশি গুছানো, কিন্তু
বেলজিয়ান গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার দারুণ নৈপুণ্যে জালের দেখা পায়নি তারাও।
রোববার রাতে কিং আবদুল্লাহ স্টেডিয়ামে
মাঠের দখলে ও শট নেয়ার দিক থেকে এগিয়ে ছিল রিয়ালই। ৬৬ শতাংশ বল দখলে রাখা রিয়াল শট
নেয় ২৪টি, যার মাত্র ৫টিই ছিল লক্ষ্যে। ৩৪ শতাংশ বলের দখল রাখা অ্যাতলেটিকো শট
নেয় ১৫টি। কিন্তু তারাও রিয়ালের সমান ৫টি শট রাখে লক্ষ্য। অ্যাতলেটিকো হুমকি তৈরি
করে একাধিকবার। কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেনি তারা। লক্ষ্যের কাছাকাছি গিয়েও শট
নিতে পারেনি ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। বিশেষ করে প্রথমার্ধে
হোয়াও ফেলিক্সের খুব কাছাকাছি গিয়ে গোল না পাওয়ার কথা বলতে হয়। অন্যদিকে রিয়ালও
বেশ কয়েকবার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। প্রথমার্ধের চেয়ে অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে বেশি
উজ্জ্বল ‘লস ব্লাঙ্কোস’রা। কিন্তু প্রকৃত গোল স্কোরার না থাকায় সুবিধা করতে পারেনি তারাও।
নির্ধারিত সময়ের মতো অতিরিক্ত সময়েও
দুই দল কাটিয়ে দেয় একটি গোলের খোঁজে। কিন্তু গোল যেন দূরের বাতিঘর। এর মাঝে
উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে অতিরিক্ত সময় শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে রিয়াল তারকা ফেদে
ভালভার্দের লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে যাওয়া। গোলের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া আলভারো মোরাতাকে
ফাউল করে এ মার্চিং অর্ডার পান তিনি। কিন্তু বাকি সময় ১০ জনের রিয়ালকে পেয়েও
সুবিধা করতে পারেনি অ্যাতলেটিকো।
রিয়ালের হয়ে আরো একবার নিজের জাদু
দেখালেন জিদান। এটি রিয়ালের হয়ে তার নবম শিরোপা। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত জিদান বলেন, ‘শেষ
পর্যন্ত আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি এবং আমরা ম্যাচের প্রস্তুতিও ভালোভাবে নিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি
জানি না কীভাবে নয়টি ফাইনাল জিতেছি। এর কারণ হতে পারে, এ
ক্লাবটিই এ রকম। তবে কাজটা মোটেও সহজ ছিল না।’ অন্যদিকে শিরোপা হাতছাড়া করার কারণ
হিসেবে মোরাতাকে করা ভালভার্দের ফাউলটির উল্লেখ করে সিমিওনে বলেন, ‘সেটাই
ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।’
বিবিসি, মার্কা ও গোল ডটকম