গেমিং ডিভাইসের বাজারে সনি-মাইক্রোসফট দ্বৈরথ

বণিক বার্তা ডেস্ক

নাগরিক জীবনে মাঠে গিয়ে খেলাধুলার সুযোগ কমে আসছে। কারণে মানুষ ইনডোর গেমসে ঝুঁকছে। বিশেষত কম্পিউটার গেমসের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক অনেকেই একক কিংবা দলগতভাবে কম্পিউটার গেম খেলে থাকেন। কারণে বিশ্বব্যাপী গেমিং ডিভাইসের বাজার বড় হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বাজার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে জাপানের সনি করপোরেশন মার্কিন টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট। পরবর্তী প্রজন্মের গেমিং ডিভাইসের বাজার দখলের লড়াইয়ে সনির হাতিয়ার প্লেস্টেশন। আর মাইক্রোসফট প্রতিযোগিতায় নেমেছে এক্সবক্স দিয়ে। এসব সিরিজের গেমিং ডিভাইসের একের পর এক সর্বাধুনিক সংস্করণ বাজারে আনছে কোম্পানি দুটি। বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রায় ২৫ বছর আগে গেমিং ডিভাইসের ব্যবসায় নামে সনি। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো প্লেস্টেশন বাজারে ছাড়ে কোম্পানিটি। ওই সময় সনির প্লেস্টেশন১ বিশ্বজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এক দশকের মধ্যে ডিভাইসটির বিক্রি ১০ কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে যায়। ২০০০ সালে এর পরবর্তী সংস্করণ বাজারে আনে সনি। প্লেস্টেশন২ নামের ডিভাইস সনির সর্বাধিক বিক্রীত গেমিং ডিভাইসের মর্যাদা পেয়েছে। বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট।

প্লেস্টেশন৩ বাজারে আসে ২০০৬ সালে। ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ডিভাইসটির বিক্রি হয়েছে কোটি ৭৪ লাখ ইউনিট। এরই মধ্যে ২০১৩ সালে প্লেস্টেশন৪ বাজারে ছাড়ে সনি। এটাই গেমিং ডিভাইসটির সর্বাধুনিক সংস্করণ। বাজারে আসার প্রথম দিনই ১০ লাখ ইউনিট বিক্রির মধ্য দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছিল ডিভাইসটি।

গেমিং ডিভাইসের বাজারে নতুন চমক নিয়ে আসছে সনি। চলতি বছরের শেষ নাগাদ কোম্পানিটি বাজারে আনবে প্লেস্টেশন৫। ডিভাইসটির বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি সনি। তবে জানা গেছে, এতে তৃতীয় প্রজন্মের এইট কোর এএমডি ৭এনএম জেন সিপিইউ এবং জিডিডিআর৬ র্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। আরো রয়েছে ৮কে রেজল্যুশনের গ্রাফিকস থ্রিডি অডিও সুবিধা। সর্বাধুনিক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেম খেলা যাবে ডিভাইসে।

অন্যদিকে গেমিং ডিভাইসের ব্যবসায় মার্কিন কোম্পানি মাইক্রোসফটের যাত্রা হয় ২০০১ সালে। ওই বছরের নভেম্বরে কোম্পানিটি বাজারে ছাড়ে আইকনিক গেমিং ডিভাইস এক্সবক্স। ২০০৬ সালের মে মাস পর্যন্ত ডিভাইস বিশ্বজুড়ে কোটি ৪০ লাখ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। ডিভাইসটির দ্বিতীয় সংস্করণ এক্সবক্স ৩৬০ বাজারে আসে ২০০৫ সালে। ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ডিভাইসটির কোটি ৪০ লাখ ইউনিট বিক্রি হয়েছে।

মাইক্রোসফটের সবচেয়ে জনপ্রিয় গেমিং ডিভাইস এক্সবক্স ওয়ান। ২০১৩ সালের নভেম্বরে ডিভাইসটি বাজারে আসে। বিশ্বজুড়ে ডিভাইসটি ১০ কোটি ইউনিটের বেশি বিক্রি হয়েছে। ২০১৬ সালে ডিভাইসটির আরো আধুনিক সংস্করণ এক্সবক্স ওয়ান এস বাজারে আনে মাইক্রোসফট। ২০১৭ সালে বাজারে আসে এক্সবক্স ওয়ান এক্স। এতে যুক্ত করা হয় সর্বাধুনিক হার্ডওয়্যার ৪কে রেজল্যুশন।

চলতি বছর আরো আধুনিক সংস্করণের এক্সবক্স সিরিজ এক্স বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। এতে তৃতীয় প্রজন্মের এইট কোর এএমডি জেন সিপিইউ এবং জিডিডিআর৬ র্যাম ব্যবহার করা হয়েছে। আরো রয়েছে ৮কে রেজল্যুশনের গ্রাফিকস রে ট্র্যাকিং সুবিধা।

তবে গেমিং ডিভাইসের দ্বৈরথে মাইক্রোসফটের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে সনি। মাইক্রোসফটের এক্সবক্স, এক্সবক্স ৩৬০ এবং এক্সবক্স ওয়ানের তুলনায় সনির প্লেস্টেশন , এবং -এর জনপ্রিয়তা বেশি ছিল। মাইক্রোসফটের ডিভাইসের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় গেমিং ডিভাইসের বাজার দখলে এগিয়ে গেছে সনি। এখন প্লেস্টেশন৫-এর তুলনায় এক্সবক্স সিরিজ এক্সের দাম বেশি হলে ক্রেতারা সনির ডিভাইস বেশি কিনবেন। কারণে মাইক্রোসফটের প্রতি নতুন গেমিং ডিভাইসের দাম কমিয়ে আনার সুপারিশ করেছেন টেক বিশ্লেষকরা। তা না হলে গেমিং ডিভাইসের বাজারে সনিকে হটিয়ে মাইক্রোসফটের শীর্ষ অবস্থান দখলের ইচ্ছা অধরাই রয়ে যাবে।

            ডেইলি এক্সপ্রেস, রয়টার্স সিএনএন অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন