চিত্রকর্মগুলোর মালিক ছিলেন ১৯৩০-এর দশকের প্যারিসের সফল ব্যবসায়ী, প্রপার্টি ডেভেলপার ও শিল্প সংগ্রাহক গাস্টন লেভি। সম্প্রতি চিত্রকর্মগুলো লেভির উত্তরাধিকারীদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সে দখলদারিত্বের সময়ে এক ইহুদি শিল্প সংগ্রাহকের বাড়ি থেকে নািসরা তিনটি নিও-ইমপ্রেশিওনিস্ট মাস্টারপিস লুট করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে আছে ক্যামিলো পিসারোর ও পল সিগনাকের আঁকা চিত্রকর্ম। শিগগিরই চিত্রকর্মগুলো লন্ডনে নিলামে উঠবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ চিত্রকর্মগুলো ‘ব্যতিক্রমী’। চিত্রকর্মগুলোর মালিক ছিলেন ১৯৩০-এর দশকের প্যারিসের সফল ব্যবসায়ী, প্রপার্টি ডেভেলপার ও শিল্প সংগ্রাহক গাস্টন লেভি। সম্প্রতি চিত্রকর্মগুলো লেভির উত্তরাধিকারীদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
লেভি বাস করতেন প্যারিসের অভিজাত এভিনিউ ডি ফ্রিডল্যান্ডে, তার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল বই, চিত্রকর্ম ও নানা ধরনের শিল্পকর্মে ঠাসা। তার স্ত্রী ছিলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। লেভির পরিবার তিউনিসিয়ায় পালিয়ে গিয়ে জীবন রক্ষা করেছিল। কিন্তু বাড়ির সব শিল্প সংগ্রহ লুট হয়ে গিয়েছিল।
লেভির সংগ্রহের দুটো চিত্রকর্ম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে ফেরত এসেছিল। সেগুলো প্যারিসের একটি জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছিল। তৃতীয় চিত্রকর্মটি চুরি হয়েছিল প্যারিসে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত লেভির গ্রামের বাড়ি শ্যাতো ডি বুফার থেকে, এটি পরে পাওয়া যায় জার্মান ডিলার হিলডেব্রান্ড গার্লিটের কাছে।
নিলাম প্রতিষ্ঠান সদবিসের ইমপ্রেশিওনিস্ট এবং মডার্ন আর্ট বিভাগের পরিচালক টমাস বয়ড-বোম্যান বলেছেন, চিত্রকর্মগুলো প্রথমবারের মতো নিলাম হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিলামে পিসারোর হোয়াইট ফ্রস্ট, ইয়ং পিজ্যান্ট বিল্ডিং আ ফায়ার ১ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডে বিক্রি হবে। নিলাম অনুষ্ঠিত হবে ৪ ফেব্রুয়ারি।
পিসারোর ছবিটি পয়েন্টিলিজম পদ্ধতিতে আঁকা এবং এগুলোকে এ পদ্ধতির শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পয়েন্টিলিজম হচ্ছে ইমপ্রেশিনিজমের শাখা।
নিলামে উঠতে যাওয়া অন্য দুটি ছবি পল সিগনাকের লা কর্নে ডি’ওর (দ্য গোল্ডেন হর্ন) এবং গ্রে ওয়েদার। এ চিত্রকর্ম দুটোর দাম যথাক্রমে ৫০ থেকে ৭০ লাখ এবং ৮ লাখ পাউন্ড পর্যন্ত উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পল ছিলেন লেভির বন্ধু। লেভি তাকে ১০৭টি ফরাসি বন্দরের ছবি আঁকার জন্য আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
গ্রে ওয়েদার ছবিটি গত বছর জার্মান কর্তৃপক্ষ লেভির পরিবারকে ফেরত দিয়েছে। ফরাসি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে পিসারো ও সিগনাকের অন্য ছবিটি লেভির পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান